০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ৬ রজব ১৪৪৬
`
এক যুগ ধরে জলাবদ্ধতা

দীর্ঘদিন পানি আটকে থাকে কেন

-

কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর সড়ক-ড্রেন যেন ডোবা! বর্ষাকালে জলমগ্ন থাকা যেন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে বিসিক এলাকার। এদিকে, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থায় যেকোনো ঋতুতে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে সড়ক ও ড্রেন ডোবায় পরিণত হয়। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম। ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, গাড়িচালক, পথচারী ও স্থানীয়রা। বাড়ছে উৎপাদন খরচ। এক যুগ ধরে এ জলাবদ্ধতার সমস্যা লেগে আছে। এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি চান সংশ্লিষ্টরা। একটি সহযোগী দৈনিকের কুমিল্লা প্রতিনিধির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিসিক সূত্র জানায়, ৫৪ দশমিক ৩৫ একর ভূমিতে গড়ে ওঠে কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী। এখানে ১৪১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩০টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে রয়েছে। গত অর্থবছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন হয়েছে। ভাঙা সড়ক ও জলাবদ্ধতায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মালবাহী পরিবহনগুলোর নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পড়তে হয় দুর্ঘটনায়।
উল্লিখিত প্রতিবেদন পড়ে জানা যায়, বিসিক কার্যালয়ের একটু পূর্বে ড্রেনের পানিতে মূল সড়ক ডুবে আছে। এ ময়লা পানি মাড়িয়ে নারী-পুরুষ কর্মস্থলে যান। এ ছাড়া বিসিকে প্রবেশের এক নম্বর সড়ক ভেঙে আছে। মনে হয়, প্রত্যন্ত কোনো গ্রামীণ সড়ক। পাকা সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় মাটির রাস্তায় রূপ নিয়েছে। সড়কটি ২০-২৫ বছর আগে সংস্কার করা হয়। এদিকে, এ সড়কের শেষ মাথায় ময়নামতি প্রেসের সামনের ড্রেন ডোবা হয়ে আছে। ‘পাবন কোম্পানি’র সামনেও একই অবস্থা। সেখানে কচুগাছ জন্মে পরিত্যক্ত স্থানে রূপ নিয়েছে। এ ছাড়া বিসমিল্লাহ মুড়ি ফ্যাক্টরির সামনের সড়কে পানি জমে আছে।
জলাবদ্ধতা নিয়ে ফরিদ গ্রুপের পরিচালক দেলোয়ার হোসেন মানিক বলেন, বিসিকের এক নম্বর সড়কটির এখনো সংস্কার হয়নি। ড্রেনেজের সমস্যা রয়েছে। বর্ষার পানির পাশাপাশি সারা বছর সড়ক ও ড্রেনে পানি জমে থাকে; যেন কোনো পরিত্যক্ত এলাকা। মশার উপদ্রবও খুব বলে জানান তিনি। কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট জামাল আহমেদ বলেন, জলাবদ্ধতা ও ড্রেনেজ সমস্যা কাটেনি। এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন ফোরামে কথা বলছি।
কুমিল্লা বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুনতাসীর মামুন বলেন, নগরীর বিভিন্ন অঞ্চলের পানি বিসিক শিল্পনগরী হয়ে নামে। পানি নিষ্কাশনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিসিক এলাকার রাস্তার কাজ অধিকাংশ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি রাস্তা ও ড্রেনের কাজ করতে প্রাক্কলন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সায়েম ভূঁইয়া বলেন, বিসিকের একটি সড়কের পাশের ড্রেন সংস্কারকাজের টেন্ডার হয়েছে। আশা করছি দ্রুত কাজ শুরু করতে পারব।
জলাবদ্ধতা সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের শত্রু। এতদিন এখানে পানি আটকে থাকার কারণ নেই। জলাবদ্ধতায় প্রচুর মশা উৎপাদিত হয় এবং প্রচণ্ড দুর্গন্ধ জন্মে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এই পানি সরানোর ব্যবস্থা করবে।


আরো সংবাদ



premium cement