০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১, ৩ রজব ১৪৪৬
`
মুন্সীগঞ্জে জমি কেনাবেচায় ভাটা

সব ধরনের বৈধ বেচাকেনায় উৎসাহিত করতে হবে

-

মুন্সীগঞ্জে জমি কেনাবেচায় ভাটার টান চলছে। জমি রেজিস্ট্রেশনের কাজে অটোমেশন পদ্ধতির জটিলতায় কেউ জমির রেজিস্ট্রেশন, খাজনা আদায় কিছুই করতে পারছেন না। তাই জমির বেচাবিক্রিও প্রায় বন্ধ।
একটি সহযোগী দৈনিকের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার পুরান বাউশিয়া গ্রামের শরীফ হোসেনের ছেলে বিদেশে যাওয়ার ভিসা পেয়েছেন। কিন্তু বিদেশে যাবার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা হাতে নেই। জমি বিক্রি করে টাকা জোগাড় করতে চান। কিন্তু ভূমি অফিসে খাজনা দিতে পারছেন না। ফলে বিক্রি করতে পারছেন না জমি। এ দিকে ছেলের ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে।

ভূমি সেবার মানোন্নয়নে পরীক্ষামূলক নতুন সফটওয়্যার চালু হলেও জটিলতা ও ত্রুটি থাকায় এমনই ভোগান্তিতে পড়ছেন মুন্সীগঞ্জের মানুষ।
শরীফ হোসেনের মতোই মুন্সীগঞ্জ সদরসহ অন্যান্য উপজেলার অনেকেই জমির খাজনা দিতে পারছেন না, করতে পারছেন না নামজারি। এতে করে এক মাস ধরে মুন্সীগঞ্জজুড়ে জমি কেনাবেচায় ভাটা পড়েছে। দলিল লেখকদের হাতের কাজ কমে গেছে। নতুন করে কমেছে দলিল রেজিস্ট্রিও। জেলার সিরাজদীখান উপজেলার শেখরনগর গ্রামের ইকবাল হোসেন তার ৫ শতাংশ জমি বিক্রি করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘জমি বিক্রি করব। সে জন্য নামজারি দরকার। এক মাস ধরে ভূমি অফিসে যাওয়া-আসা করছি। সফটওয়্যারের সমস্যায় সার্ভার না পাওয়ায় নামজারি করতে পারছি না।’ একই উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের শিয়ালদী গ্রামের আওয়াল শেখ বলেন, ‘গত এক মাসের বেশি সময় ধরে আমি নামজারির জন্য উপজেলা ভূমি অফিসে দৌড়াচ্ছি। অফিসে এলেই সার্ভার বন্ধ থাকার কথা জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে জমি বিক্রি করতে পারছি না।’ ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভূমিসংক্রান্ত কাজে গতি আনতে ৫টি সফটওয়্যার একত্র করে ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের আওতায় ৪টি সফটওয়্যারের মানোন্নয়ন এবং একটি নতুন উদ্ভাবিত সফটওয়্যার চালু হলেও কাজে আসছে না।

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা গেলেও ভূমি কার্যালয়ের অ্যাকাউন্ট লগইন করতে সমস্যা হচ্ছে। সরেজমিন জেলার গজারিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে গেলে নতুন করে খাজনা আদায় কিংবা নামজারি করতে আসা সেবা গ্রহীতার দেখা মেলেনি। একই দিন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি সাব-রেজিস্ট্রারকে।
গজারিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন শরীফ বলেন, ‘কারিগরি কিছু ত্রুটির কারণে সার্ভারটি সম্পূর্ণ সচল হয়নি। আশা করছি, শিগগির সচল হবে। যাদের আবেদন জমা আছে, এ মাসের মধ্যেই ক্লিয়ার করে দেয়া হবে।’
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম হাসানুর রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্যায়ে সফটওয়্যার আপগ্রেড হয়েছে। তবে এখনো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। আমরা সমস্যাগুলো প্রতিনিয়ত ভূমি মন্ত্রণালয়কে জানাচ্ছি। শিগগিরই সমস্যা সমাধান হবে বলে তারা জানিয়েছেন।’
কেনাবেচা করা মানুষের স্বাভাবিক অধিকার এবং প্রবণতা। সরকারকেই এই কেনাবেচার পথে প্রতিবন্ধকতা নিরসন করা দরকার। মুন্সীগঞ্জে জমি কেনাবেচায় সমস্যা হলো কেন? এটা সরকারকেই দেখতে হবে। আশা করি সরকার অবিলম্বে এ ব্যাপারে নজর দেবে। অন্যথায় সমস্যা আরো জটিল হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement