বিচার নিশ্চিত করতে হবে
- ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অবিশ্বাস্য সব দুর্নীতির খবর একের পর এক বেরিয়ে আসছে। শুধু দেশের নয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে এসব খবর। মূলত জনগণের অর্থ তারা ব্যক্তিগত সম্পদের মতো যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন, আত্মসাৎ করেছেন এবং ইচ্ছামতো বিদেশে পাচার করেছেন।
শেখ হাসিনার পতনের পর এখন জানা যাচ্ছে, তিনিসহ তার পরিবারের প্রায় সব সদস্য দুর্র্নীতিগ্রস্ত। শুধু হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় নয়, এসব দুর্নীতির সাথে হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকেরও সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি ও মন্ত্রী। শুধু তা-ই নয়, তিনি দুর্র্নীতি নিরোধসম্পর্কিত একটি কমিটির দায়িত্বে রয়েছেন। তার পরও তিনি দুর্নীতিমুক্ত থাকা দূরের কথা, নিজেই আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। টিউলিপ সিদ্দিককে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে প্রায় চার বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ দফতরের প্রোপ্রাইটি ও এথিক্স টিম (পিইটি)। এ খবর ব্রিটেনের সব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
জনগণের অর্থ চুরি ও অবৈধভাবে পাচারে নিজ দেশের আইনকানুন মানেননি, ন্যূনতম নীতি-নৈতিকতার ধার ধারেননি। অথচ নিজেদের সৎ হিসেবে জনগণের সামনে তুলে ধরার চেষ্টার কোনো কমতি তাদের ছিল না।
শেখ হাসিনা প্রায়ই গর্বভরে ঘোষণা দিতেন, বঙ্গবন্ধুর মেয়ে দুর্নীতি করে না। মানুষকে এমন সবকও দিতেন, অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থে পোলাও-গোশত খাওয়ার চেয়ে ডাল-ভাত খাওয়া উত্তম। অথচ সেই মানুষটি হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছেন। সজীব ওয়াজেদ জয়ও সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে দুর্র্নীতির ঊর্ধ্বে প্রমাণে ঘোষণা করেন, আমি বঙ্গবন্ধুর নাতি; অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর নাতি দুর্র্নীতি করতে পারে না। কিন্তু কেউ বলার সাহস পাননি, দুর্নীতির দায়ে শেখ মুজিবকেও পাকিস্তান আমলে জেল খাটতে হয়েছিল এবং মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছিল।
দেশের রাজনীতি-অর্থনীতিসহ সব কিছু ধ্বংস করে তারা কার্যত ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল শুধুই নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা এবং ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে। তাদের দুর্নীতির কথা বলতে গেলে প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।
দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও দুঃশাসনের মাধ্যমে এই শেখ পরিবার দেশের ভাবমর্যাদা সব দিক থেকে ধ্বংসের শেষ সীমায় নিয়ে গেছে। দেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসের বেশির ভাগ সময় তারা শাসনক্ষমতায় ছিল। তাদের দুর্বৃত্তায়নের কারণে দেশ আজও কোনো দিক থেকে এগোতে পারেনি।
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল শেখ হাসিনার দুর্নীতি ও হত্যার রাজনীতির বিচারের। এরই মধ্যে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিচারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু সংস্কার ও নির্বাচনের টানাপড়েনের পাশাপাশি দেশে সর্বাত্মক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড, গুপ্তহত্যা শুরু হয়ে গেছে। কারা, কেন এসব করছে- সেটি সচেতন দেশবাসীর বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার কঠোরভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে হাসিনার বিচার অনিশ্চয়তায় পড়বে।
যারা দেশ পরিচালনা করছেন ও ভবিষ্যতে করতে চান তাদের বিষয়টি ভাবতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা