০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`
ভারতে বাংলাদেশী রোগীতে ভাটার টান

দেশেই চাই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা

-

স্বাধীনতার পর কিছু ক্ষেত্রে আমরা ভালো করলেও স্বাস্থ্য খাত উপেক্ষিত। যে কারণে বাংলাদেশের অনেকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পেতে ভিন দেশে যান। এ দেশের সচ্ছল পরিবারের বেশির ভাগ স্বাস্থ্যসেবা নিতে মূলত ভারতে যান। আমাদের রোগী ও অন্যান্য পর্যটক ঘিরে সেখানে গড়ে উঠেছে বড় বাণিজ্য। বাংলাদেশীরা ভারতে না গেলে সেখানকার ব্যবসায়ী ও স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শোনা যায় হতাশার কথা।
গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এক বিশেষ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশীদের ভিসা দিতে কঠোর নীতি নিয়েছে ভারত। চিকিৎসা ভিসাও দিচ্ছে হাতে গোনা। এতে ভারতে চিকিৎসাসেবা নিতে যাওয়া বাংলাদেশী রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় অর্ধেকে নেমেছে।
একটি সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ভ্রমণকারী বাংলাদেশীদের ৮০ শতাংশ দেশটিতে যান চিকিৎসার জন্য। তাদের একটি বড় অংশ যান সড়ক ও রেলপথে। বেনাপোল ইমিগ্রেশনের তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত লাখ ৭৬ হাজার ৪০৪ বাংলাদেশী ভারতে গেছেন, যা গত বছরের চেয়ে এক লাখ ৮০ হাজার কম। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে চার লাখ ৬১ হাজার বাংলাদেশী ভারতে গেলেও পরবর্তী সময়ে প্রায় ছয় মাসে এ সংখ্যা তিন লাখের মতো।
প্রায় একই অবস্থা আখাউড়া স্থলবন্দরেও। আখাউড়া স্থলবন্দরের তথ্য, ২০২৩ সালে এ পথে দেড় লাখ বাংলাদেশী ভারতে গেলেও এ বছর এই সংখ্যা এক লাখের মতো। বিশেষ করে গত ছয় মাসে উল্লেখযোগ্য হারে যাত্রী সংখ্যা কমেছে। যেখানে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গেছেন ৬৭ হাজার, সেখানে পরের পাঁচ মাসে তা নেমে এসেছে ৪০ হাজারে। যাত্রী কমেছে আকাশপথেও। ভারতগামী বিমানের ট্রিপগুলোতে যাত্রীর চাপ কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
দেশে নির্ভুল রোগ নির্ণয়, বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবার অভাব, চিকিৎসায় অবহেলা-এসব কারণে রোগীদের বড় একটি অংশ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান। সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা পান না। তাই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সেখানেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পেলে, যাদের সক্ষমতা রয়েছে তারা চিকিৎসা নিতে বিদেশে যান।
বর্তমানে ভারতে রোগী যাওয়া কমলেও বেড়েছে থাইল্যান্ডে যাওয়ার প্রবণতা। থাইল্যান্ডে আগের তুলনায় এখন দ্বিগুণ রোগী যাচ্ছেন। লক্ষণীয়, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়াদের অধিকাংশ মধ্যবিত্ত। অন্য দিকে থাইল্যান্ডে যান উচ্চবিত্তরা। ভারতে চিকিৎসা নিতে না পেরে বাংলাদেশের অনেকে যে সঙ্কটে রয়েছে তা অস্বীকারের উপায় নেই। এটি দেশের স্বাস্থ্য খাতের নীতিনির্ধারকরা কি উপলব্ধি করেন? ভারতমুখী রোগীর স্রোত বন্ধ করতে আমাদের স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টরা কি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন?
আমাদের কী নেই, দেশের মেডিক্যালে পড়–য়ারা কি ভারতের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের মেধার তুলনায় দুর্বল; নিশ্চয় নয়। দেশীয় চিকিৎসকদের দক্ষতার তুলনায় ভারতীয় ডাক্তাররা কি বেশি দক্ষ? তা-ও নয়। তবে সত্যি যে, তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানাবিধ অভিযোগ। সেসব অভিযোগ কেন উঠছে তা খতিয়ে দেখা জরুরি। মেধাবী শিক্ষার্থীরা মেডিক্যালে পড়াশোনা করেন। সুতরাং তারা যখন চিকিৎসা পেশায় আসেন তাদের বিশ্ব মানের বেতনভাতা দেয়া প্রয়োজন।
আমরা আশাবাদী, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে একটি কমিশন গঠন করেছে। সবার প্রত্যশা, স্বাস্থ্য কমিশন এ খাতে এমন একটি সংস্কার প্রস্তাব করবে যাতে দেশের চিকিৎসকদের পরিপূর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে, একই সাথে মানুষকে চিকিৎসার জন্য আর বিদেশমুখী হতে হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
শিক্ষার সাথে নৈতিকতার সংযোগ না ঘটলে মানুষ হওয়া যায় না : ধর্ম উপদেষ্টা দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ ফ্যাসিবাদের পতন হওয়ায় স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি : উপদেষ্টা ফরিদা সেনাবাহিনী প্রধানের সাথে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফের সাক্ষাৎ ঘিওরে মাদরাসা শিক্ষিকার গলাকাটা লাশ উদ্ধার গোপালগঞ্জে পরিবারের আপত্তিতে শহীদ আরাফাতের লাশ উত্তোলন করা হয়নি শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে ভারতে পৌঁছে দিলো মার্কিন উড়োজাহাজ সাবেক এমপি ফজলে করিমকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ শাহজাদপুরে নৌকা ডুবি, নিখোঁজ ১ সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি কেনার সুবিধা বাতিলের সুপারিশ অস্ত্রসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

সকল