সদিচ্ছা প্রকাশে দিল্লির এখনই সময়
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের পৃথক মামলায় গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদনও করা হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে।
এমন প্রেক্ষাপটে ভারতে আশ্রয় নেয়া পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে দিল্লিকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় এই অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত সোমবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের মুখোমুখি করতে তাকে ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে ভারতকে নোট ভার্বাল পাঠানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে তারা ‘একটি প্রত্যর্পণের অনুরোধ সংক্রান্ত’ নোট ভার্বাল হাতে পেয়েছেন। তবে, জয়সওয়াল আরো জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা এখনই কোনো মন্তব্য করবেন না।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি সই হয়, যা ২০১৬ সালে সংশোধিত হয়। দুই দেশের মধ্যে পলাতক আসামিদের দ্রুত এবং সহজে বিনিময়ের জন্য এ চুক্তি করা হয়। চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফেরত চায় ঢাকা। তার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য কিছু দুর্নীতির ঘটনায় দেশের একাধিক সংস্থার তদন্ত চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশের অনুরোধে হাসিনাকে ফেরত দিতে আইনিভাবে বাধ্য ভারত। তবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না বলে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নোট ভার্বাল মানে হলো বাংলাদেশ অফিসিয়ালি (আনুষ্ঠানিকভাবে) ভারতকে অনুরোধ করেছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য। এখন ভারত হয়তো এর জবাব দিতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘চুক্তির কতগুলো ধারা আছে যা অনুযায়ী তারা তাকে (হাসিনাকে) ফেরত দিতে বাধ্য, আবার কিছু ধারা আছে যেখানে ভারত বাধ্য নয়।’
সাড়ে ১৫ বছর ধরে জগদ্দল পাথরের মতো জাতির ঘারে চেপে বসা শেখ হাসিনা জনরোষ থেকে বাঁচতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। ভারতও তাকে সাদরে গ্রহণ করেছে। সেখানে বসে হাসিনা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এতে ভারতের যে মদদ রয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন আর আগের মতো নেই। এর আগে উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াসহ অনেক আসামিকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ। এখন ভারতও সেই চুক্তি মেনে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেবে এটিই কাম্য।
বাংলাদেশের মানুষ দিল্লির তাঁবেদার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করায় স্বাভাবিকভাবেই ভারত সেটি মেনে নিতে পারেনি। বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতা ভারত বাংলাদেশ স্বাভাবিক সম্পর্কের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের নিজের নির্মিত এই প্রাচীর ভাঙতে হবে তাকেই। তাই ঢাকা যে শেখ হাসিনাকে ফিরে পেতে চেয়েছে তা ভারতকে পূরণ করতে হবে। সঙ্গত কারণে বলা যায়, দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ করতে দিল্লির সদিচ্ছাই একমাত্র নিয়ামক বলে আমরা মনে করি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা