০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`
রাজধানীতে প্রতিদিন ছিনতাই চুরি

আইনশৃঙ্খলায় দুর্বলতা

-


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর সারা দেশ থেকে রাতারাতি পুলিশ সদস্য উধাও হয়ে যান। বিগত সাড়ে ১৫ বছর রাষ্ট্রীয় বিধিবিধান উপেক্ষা করে হাসিনার অবৈধ শাসন টিকিয়ে রাখতে পেশাদারত্ব বিসর্জন দেয়া সরকারি এই বাহিনী এমন বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে। ফ্যাসিবাদী শাসনের সুরক্ষা দিতে গিয়ে দেড় দশকে গণদুশমনে পরিণত হয় পুলিশ। তাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণরোষ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে গা-ঢাকা দিতে হয় পুলিশ সদস্যদের। এক দিকে ফ্যাসিবাদের দোসর পুলিশ সদস্যদের কাজে যোগ না দেয়া, অন্য দিকে বাহিনীর চেন অব কমান্ড ফিরে না আসায় দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। আইনশৃঙ্খলার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দুর্বলতার সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দুর্বৃত্তরা।

সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকাতেও অপরাধ বেড়েছে। বিশেষ করে ছিনতাই-রাহাজানি। অবস্থা এমন যে, রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় পেশাদার ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। তাদের হাতে প্রাণও হারাচ্ছে নিরীহ মানুষ।
নয়া দিগন্তের খবর অনুযায়ী, গত ১৮ ডিসেম্বর আদাবরে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফিরোজ আহমেদকে ছিনতাইকারীরা ছুরিকাঘাত করে টাকা ও মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেয়। ১৯ ডিসেম্বর রাতে শ্যামলী রিং রোডে নাজমুল হাসান নামে এক যুবকের হাত-পায়ে ছুরিকাঘাত করে সব নিয়ে যায়। ২১ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আবুল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী আহত হন। ধানমন্ডিতে এক বাসায় ডাকাতদের বাধা দিতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার ছুরিকাঘাতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক চিকিৎসক নিহত হন। মঙ্গলবার রামপুরা ব্রিজে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হন।

১১ ডিসেম্বর ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান সীমান্ত নামের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। হাতিরঝিল এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন মোহাম্মদ রাকিব নামের আরেক যুবক। মগবাজার ওয়্যারলেস গেটে ১৫ ডিসেম্বর ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মোহাম্মদ হাবিব নামের এক কিশোর নিহত হয়। সায়েদাবাদে গত বুধবার কামরুল হাসান নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত হন। গত শুক্রবার রাতে যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ায় কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সাহেদ আহম্মেদ সজিব ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। সম্প্রতি তুরাগের কামারপাড়ায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়া এক নারী ও তার মেয়েকে এসিড নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড় ঢাকার প্রায় সব মহল্লায় চুরি-ডাকাতি বেড়েছে। এসব ঘটনায় রাজধানীবাসী রীতিমতো অতিষ্ঠ।

পুলিশ বাহিনী পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে না ওঠায় রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় টহল বন্ধ। এতে দুর্বৃত্তরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগে থেকে বিপজ্জনক কিছু এলাকা আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
বাহিনীতে শৃঙ্খলা না ফেরার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনেক ক্ষেত্রে মানছেন না মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা। তারা ইচ্ছেমতো দায়িত্ব পালন করায় আইনশৃঙ্খলার এমন অবস্থা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মাঠপর্যায়ের কিছু পুলিশ সদস্য ইচ্ছেকৃতভাবে এমন আচরণ করছেন যাতে সরকার বিপাকে পড়ে।
আমরা মনে করি, অতি দ্রুত পুলিশ বাহিনীকে কঠোর শৃঙ্খলা এনে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে আইনশৃঙ্খলার দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে ফ্যাসিবাদের দোসররা বড় ধরনের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের সাহস পাবে। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

 

 

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো গ্রহণ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান আদালত প্রাঙ্গণে সভা-মিছিল নিষিদ্ধের সুপারিশ বরিশাল-১ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে : ডা. তাহের শিক্ষার সাথে নৈতিকতার সংযোগ না ঘটলে মানুষ হওয়া যায় না : ধর্ম উপদেষ্টা দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ ফ্যাসিবাদের পতন হওয়ায় স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি : উপদেষ্টা ফরিদা সেনাবাহিনী প্রধানের সাথে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফের সাক্ষাৎ ঘিওরে মাদরাসা শিক্ষিকার গলাকাটা লাশ উদ্ধার গোপালগঞ্জে পরিবারের আপত্তিতে শহীদ আরাফাতের লাশ উত্তোলন করা হয়নি শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে ভারতে পৌঁছে দিলো মার্কিন উড়োজাহাজ

সকল