জাতি বিনির্মাণে এদের শরিক করুন
- ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আমাদের জন্য জুলাই বিপ্লব বিপুল আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। গুম খুন ও চরম পীড়নের শিকার মানুষ তা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছেন। এমনকি যারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়েছিল তারাও এর মর্ম বুঝতে পারছেন। তবে ফ্যাসিবাদের দোসর ছাড়াও একটি অংশ যারা লুটপাটের সুবিধাভোগী তাদের কাছে এর গুরুত্ব নেই। স্বৈরাচারী একনায়ক হাসিনাকে উৎখাত করে অর্জিত চড়ামূল্যের এই অর্জন রক্ষা করা জাতির জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। আত্মোৎসর্গ করা বিপ্লবী এবং এ অভ্যুত্থানে আহত ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথা মূল্যায়ন করে সেটি আমরা করতে পারি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরুতে পেটুয়া বাহিনীর হামলায় আহতদের প্রতি হাসিনা সরকার নিষ্ঠুর আচরণ করেছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। এরপর নিহতদের দাফন-কাফনে বাধা দেয়া হয়েছে। তাদের পরিবারের প্রতি করা হয়েছে চরম অবমাননাকর আচরণ। যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা প্রাপ্তিতে বাধা দেয়া হয়। এমনকি বেসরকারি হাসপাতালের ওপরও চাপ দেয়া হয় যাতে আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা দেয়া না হয়।
চিকিৎসা না পেয়ে তখন অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। আবার সময়মতো চিকিৎসা নিতে না পেরে অনেকে চোখসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারিয়েছেন। এসব বিপ্লবী যদি রক্ত না দিতেন তাহলে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে আমাদের মুক্তি মিলত না। তাই জুলাই বিপ্লবে রক্ত দেয়া ছাত্র-জনতাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিতে হবে। এ বিষয়ে শতভাগে খেয়াল রাখতে হবে। কথাগুলো এ কারণে বলা যে, কিছু ক্ষেত্রে আন্দোলনে আহত এবং শহীদদের পরিবার ভালো নেই। তারা সরকারি সাহায্য পাননি। অনেকের জন্য মিলছে না উপযুক্ত চিকিৎসা। যাত্রাবাড়ীতে প্রাণ হারানো নাজমুলের স্ত্রী রাখি এক শিশুকন্যা নিয়ে মানবেতর অবস্থায় পড়েন। স্বামীর অবর্তমানে তার কোনো উপার্জন নেই। যে কারণে তিনি বাসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। একজন চিকিৎসক অ্যাক্টিভিস্টকে তার দায়িত্ব নিতে হয়েছে। জানা যাচ্ছে, রাখি সরকারের সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী, জুলাই বিপ্লবে ৮৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৫৫১ জন। সরকারের দেয়া সুবিধা তাদের প্রত্যেকের কাছে পৌঁছাতে হবে। পরিবারের এক সদস্যের প্রাণহানিতে অন্যরা যেন বিপদে না পড়েন সেদিকে খেয়াল করতে হবে। অন্য দিকে যাদের অঙ্গহানি হয়েছে তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে। আরো খেয়াল রাখতে হবে, তালিকার বাইরে থেকে যাওয়া কেউ যেন বিপদে পড়ে না যান।
ছাত্র-জনতা যে কারণে জীবন দিয়েছেন তার মূল্যায়ন হতে হবে। এর প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের যথাযথ স্বীকৃতি। যারা আহত হয়েছেন তাদের যথাযথ মূল্যায়ন। সরকার যদি সেটি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে বিপ্লবের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। কোনোভাবে তা হতে দেয়া যাবে না। একটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও আমরা সেটি হারাতে পারি না। সঙ্গতকারণে বলা যায়, বিপ্লবীদের উপযুক্ত মূল্যায়ন করা গেলে এই গণ-অভ্যুত্থানকে জাতি বিনির্মাণে আমরা কাজে লাগাতে পারব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা