সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ বাড়ান
- ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বিপর্যয়ের পর ইউক্রেন যুদ্ধ এ পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে নিয়ে যায়। পরবর্তী বছরগুলোতে বিভিন্ন দেশ অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠেলেও বাংলাদেশের অবস্থা শোচনীয় থেকে গেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রতিকূল প্রবণতার সাথে সীমাহীন লুটপাট ও অব্যবস্থাপনা আমাদের গরিব ও নি¤œ আয়ের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক করে তুলেছে। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হলেও দারিদ্র্য পরিস্থিতির কোনো উন্নয়ন করা যায়নি।
বেসরকারি সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যা পিড) তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের দারিদ্র্য আরো গভীর হচ্ছে। তারা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএসের ২০২২ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর সময়ের তথ্য যাচাই করে। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে ৭৮ লাখ ৬০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। ৩৮ লাখ ২০ হাজার মানুষ দরিদ্র থেকে হতদরিদ্র হয়েছে। দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ৯৮ লাখ ২০ হাজার মানুষ।
র্যা পিডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মূল্যস্ফীতি ও মজুরি বৃদ্ধির সরকারি হিসাব পর্যালোচনা করে গরিব মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির এ প্রাক্কলন করা হয়। সংস্থাটির ধারণা, মোট দারিদ্র্যও বেড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অব্যাহত মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। সাধারণত এটি ১০ শতাংশের উপরে রয়েছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার সবচেয়ে বেশি থাকছে। এর অভিঘাত সবচেয়ে বেশি পড়ছে দরিদ্র মানুষের ওপর। চাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, ডিম- এ ধরনের কিছু পণ্য দরিদ্র জনগোষ্ঠী কিনতে বাধ্য হন। জীবন বাঁচাতে এগুলো বাজার থেকে কেনা ছাড়া উপায় থাকে না।
একটি পণ্যের মূল্য যদি ১৩ শতাংশ বাড়ে তাহলে তাকে আগের ১০০ টাকার পণ্য ১১৩ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। নিত্য খাদ্যপণ্যের দাম বিগত বেশ কয়েক বছর অব্যাহত বেড়েছে। বিপরীতে মজুরি বৃদ্ধি ঘটেছে সামান্য। কিছু ক্ষেত্রে মজুরি কমেছে আবার অনেকের ক্ষেত্রে তার উপার্জনের উপায়টি বন্ধ হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তাই অব্যাহত কমে চলেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্রয়ক্ষমতা ৬ শতাংশ কমেছে। এ অবস্থায় কিছু পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার উদ্যোগ নেয়া যায়। ওই পণ্যগুলোর উৎপাদন বিপণনের পুরো বিষয় তলিয়ে দেখতে পারে সরকার। সংস্থাটি ১০ থেকে ১২টি পণ্যের দাম কমাতে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের পরামর্শ দিয়েছে।
গরিব ও নি¤œবিত্ত মানুষের জন্য পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় করতে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে র্যা পিড। খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা- এ ধরনের ৯টি সামাজিক সুরক্ষা খাতের বরাদ্দ দ্বিগুণ করতে ২১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি ব্যয় হবে। এতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাত্র ৮ শতাংশ অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। বিগত সরকার উন্নয়ন ব্যয়ে সীমাহীন খরচ করেছে। প্রকৃতপক্ষে এর বড় অংশ লুটপাট হয়েছে। এ ব্যয় সামান্য কাটছাঁট করে সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ দেয়া হলে সমাজের নিচের অংশের মানুষ এর বিশাল সুবিধা পাবে।
সর্বশেষ চালচিত্র বুঝতে বিস্তৃত কোনো জরিপ হয়নি। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার আসল চরিত্র বুঝতে একটি বিস্তৃত জরিপ প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা