১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রগুলোর জোট সার্ক

পুনরুজ্জীবিত করা জরুরি

-


সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন (সার্ক) বা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা হলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান- এই আটটি দেশের একটি জোট। ১৯৮৫ সালের ৭-৮ ডিসেম্বর ঢাকা সম্মেলনে সার্কের আনুষ্ঠানিক সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদিত হয়। তখন থেকে এর যাত্রা শুরু। শুরুতে এই আঞ্চলিক জোটের সদস্য সংখ্যা ছিল সাত। পরে আফগানিস্তানকে সদস্য করা হয়।
সার্ক গঠন দক্ষিণ এশিয়ার দেশে দেশে বেশ সাড়া ফেলে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষ নিজেদের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কারণ, সমকালীন বিশ্বে একে-অপরের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া বৈষয়িক উন্নতি প্রায় অসম্ভব। চির বৈরী ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্বে সার্কের কার্যক্রম বলতে গেলে শুরুতেই হোঁচট খায়। আর এখন তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে দিল্লির বড় ভাইসুলভ আচরণকে দায়ী করা হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সার্কের পুনর্গঠন বা গতিশীল করার আহ্বান জানিয়েছেন। সার্কের চেতনার পুনরুজ্জীবন হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশের শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এক সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, আট জাতির এই জোট আঞ্চলিক অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। একটি মহৎ উদ্দেশ্যে সার্ক প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি এখন শুধু কাগজে সীমাবদ্ধ এবং এটি এখন কাজ করছে না।
দক্ষিণ এশিয়ায় বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, বিপুল জনগোষ্ঠী এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্ভাবনা থাকার পরও সার্ক কার্যকরভাবে লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন সার্ক সফলতার মুখ দেখতে পারছে না? এক কথায় এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাবে না। এর জন্য বহুমাত্রিক কারণ বিদ্যমান।

আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এ অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত সার্ক পুনর্গঠন বা গতিশীল করা এ মুহূর্তে খুব জরুরি। এ জন্য ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলোর সমাধানে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। এই দ্বন্দ্ব নিরসন ছাড়া সার্ক কার্যকর করা কঠিন। একই সাথে নিতে হবে বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যসংক্রান্ত বাধা দূর করে সার্ককে একটি কার্যকর বাণিজ্যিক জোট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সঙ্গত কারণে বাণিজ্য সম্প্রসারণে অবকাঠামো, লজিস্টিকস এবং শুল্ক সহজ করার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। একে-অপরের মধ্যে রেল, সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়াতে হবে। সাথে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। সার্কের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও উদ্ভাবনী প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়ানো গেলে তা এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
সার্কের পুনর্জাগরণ শুধু আঞ্চলিক বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নয়; বরং এ অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায়ও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।
সার্ককে নতুন উদ্যমে কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলের মানুষকে উন্নয়নের নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।


আরো সংবাদ



premium cement
শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বিএনপির আ.লীগের নির্বাচন নিয়ে বদিউল আলমের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান বৈষম্যবিরোধীদের চলতি বছর পোল্ট্রি ব্রিডার শিল্পে ক্ষতি ৭৫০ কোটি টাকা কর ছাড় নিয়ে আদানির শর্ত লঙ্ঘন, চুক্তি পর্যালোচনা করতে চায় বাংলাদেশ হজ প্যাকেজের বাকি টাকা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে দেশ গঠনে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে : তারেক রহমান পুতিন যেকোনো সময় ট্রাম্পের সাথে দেখা করতে প্রস্তুত নারায়ণগঞ্জে গাড়ি চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার আবার লোহিত সাগরে বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে আমেরিকা একাত্তরের অমীমাংসিত সমস্যা মীমাংসা করুন : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টা গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হলো

সকল