জনভোগান্তি দূর করুন
- ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিগত ১৫ বছরের আওয়ামী শাসনে দেশের প্রতিটি সরকারি দফতর হয়ে উঠেছিল অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা, ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্তব্যে অবহেলা, গাফিলতির নমুনা দেখা গেছে সর্বত্র। সবার একমাত্র লক্ষ্য ছিল কিভাবে উপরি আয়ের সুযোগ নেয়া যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী শাসকরা ধরাশায়ী ও বিতাড়িত হয়েছে। এসেছে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। আশা করা গিয়েছিল, জন-আকাক্সক্ষার এ সরকারের সময় অতীতের স্থবিরতা কাটবে। নতুন উদ্যমে, নতুন কর্মোদ্দীপনায় দেশ পুনর্গঠনে কাজ শুরু হবে। জনগণের ভোগান্তি কমবে। কিন্তু সে আশা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। সরকারি দফতরগুলোতে আওয়ামী ধারাবাহিকতা চলছে। উদাহরণ সারা দেশের ভূমি অফিসগুলো। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব ভূমি অফিসে স্বাভাবিক কার্যক্রম থমকে আছে প্রায় পক্ষকাল ধরে। বন্ধ হয়ে আছে জমিজমা-সংক্রান্ত কাজকর্ম। জমি কেনাবেচার কাজ প্রায় বন্ধ। আর এর কারণ শুধু একটি সফটওয়্যার স্থাপনে ব্যর্থতা।
পতিত সরকার বহুল প্রচারিত ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগান দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে অথর্ব ডিজিটাল-ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল। তার অংশ হিসেবে সরকারি দফতরগুলোর সেবা কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ সেবা পেতে জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হতো। এখনো সে ধারা চলছে।
একটি সহযোগী দৈনিকের খবর অনুযায়ী, গত পয়লা ডিসেম্বর অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর ও নামজারি সেবায় দ্বিতীয় প্রজন্মের সফটওয়্যার চালুর পর থেকে নতুন করে ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। নতুন সফটওয়্যার চালুর আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়নি। টেস্টিং ও ইন্টিগ্রেশনের চেকলিস্ট সম্পন্ন করা হয়নি। কোনো কারিগরি টিম তৈরি বা তাদের ফিডব্যাকও নেয়া হয়নি। প্রকল্প অফিসের একক সিদ্ধান্তে সিস্টেমটি চালু করা হয়েছে। তার পর থেকে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। নতুন সার্ভারে জমিসংক্রান্ত তথ্য আপলোড করা যাচ্ছে না। সত্যতা যাচাই করা যাচ্ছে না। ভূমি অফিসের কর্মীরা কখনো সার্ভার ডাউন, কখনো সার্ভার কাজ করছে না- ইত্যাদি বলে মানুষকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। অথচ প্রতিটি এসিল্যান্ড কার্যালয়ে বিপুলসংখ্যক নামজারি পর্চা ও খাজনা পরিশোধের আবেদন জমে আছে। ২৬ নভেম্বরের আগের এসব আবেদনের নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে কারো কোনো নির্দেশনাও নেই।
রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, সফটওয়্যার বসানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগে ঘাটতি ছিল। তারা দায়সারাভাবে কাজটি করেছেন। কিন্তু তার চেয়েও যেটি গুরুতর সেটি হলো- সেবা নিশ্চিত করা এবং জনভোগান্তি দূর করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনার অনুপস্থিতি। এটিই হলো আওয়ামী স্টাইল। দায়িত্বে থেকে দায় না নেয়ার যে সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর ধরে অনুসরণ করেছে, বর্তমান সময়েও সেটিই যেন চলছে।
আমরা এ বিষয়ে ভূমি উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তার মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতরগুলোতে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা থাকলে সেই দায় তাকে নিতে হবে। কার অবহেলায় সেবা বিঘি্ণত হচ্ছে, জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে- সেটি তাকে দেখতে হবে। দেশবাসী আশা করেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দায় এড়ানোর স্বৈরাচারী সংস্কৃতির অবসান ঘটবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা