১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
গুমের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা

বিচার নিশ্চিত করুন

-


দুনিয়ায় অতীতে অনেক স্বৈরশাসক ছিলেন। এখনো নানা দেশে স্বৈরশাসক রয়েছেন। তবে সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, নিকৃষ্ট স্বৈরশাসকের তালিকায় শেখ হাসিনার নাম অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বাংলাদেশের মতো একটি সামাজিক-সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থার দেশে গুম, খুন, হিংসা-বিদ্বেষ-বিভেদ ছড়িয়ে সমাজকে বহুধাবিভক্ত করেছেন এই শেখ হাসিনা। এসব করেছেন নিজের শাসন দীর্ঘায়িত করতে।
বিগত প্রায় ১৬ বছরে দেশে গুমের নির্দেশদাতা ছিলেন শেখ হাসিনা স্বয়ং নিজে। গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের (দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স) প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ছাড়াও গুমের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন সাবেক প্রতিরাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
কমিশন প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন; যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়। বিভিন্ন ফোর্স নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে। একই সাথে পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করতে অন্তর্র্বর্তী সরকার এই কমিশন গঠন করে। কমিশনে র‌্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ৭৩ শতাংশ ভুক্তভোগী ফিরে এসেছেন। বাকি ২৭ শতাংশ (অন্তত ২০৪ জন ব্যক্তি) এখনো নিখোঁজ। তবে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গড়ে ওঠা সংগঠন ‘মায়ের ডাকে’র তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুম হওয়া ১৫৫ জন এখনো ফিরে আসেননি। সংগঠনের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি গণমাধ্যমকে বলেন, না ফেরাদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। প্রায় ৩০০ ব্যক্তি এখনো নিখোঁজ বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

গত ২৭ আগস্ট গুমের তদন্তে কমিশন গঠন ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সেই সাথে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) গুমের বিচার করার উদ্যোগও জনমনে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা বাড়িয়ে দিয়েছে। গুমসংক্রান্ত কমিশনের জমা দেয়া গুমের এ প্রতিবেদন শেখ হাসিনাসহ তার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। তবে গুম কমিশনের একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন- যেসব ব্যক্তি এখনো গুম রয়েছেন; তারা আদৌ বেঁচে আছেন কি না। কেননা, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, কমিশনার চৌধুরী আলম কিংবা ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা ওয়ালীউল্লাহ ও আল-মুকাদ্দাস কী অবস্থায় রয়েছেন তা এখনো কারো জানা নেই। বিষয়গুলো দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। গুমবিষয়ক কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আয়নাঘর খ্যাত শেখ হাসিনার গোপন বন্দিশালাগুলো পরিদর্শনের অনুরোধ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তাতে সম্মতি দিয়েছেন। আমরা মনে করি, প্রধান উপদেষ্টা শেখ হাসিনার তৈরি এসব গোপন বন্দিশালা শুধু পরিদর্শন করবেন না, সেই সাথে এগুলো সংরক্ষণেরও ঘোষণা দেবেন। ভবিষ্যতে দেশে স্বৈরশাসন রুখতে এটি করা প্রয়োজন।
আমরা মনে করি, গণহত্যার বিচারের পাশাপাশি গুম-খুনের সাথে জড়িত শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের যথোপযুক্ত বিচার করা ন্যায়বিচারের স্বার্থে অত্যন্ত জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতকে কাঠাল গাছে ঝুলিয়ে মেরে ফেলার হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের সাবেক এমপি ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী আটক মহাদেবপুরে রাস্তার পাশে থেকে যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার মহাদেবপুরে রাস্তার পাশে থেকে যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার শ্রমিকদের অবহেলিত রেখে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয় : সেলিম উদ্দিন মহাদেবপুরে যুবকের লাশ উদ্ধার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠকসহ ৩ নেতাকে মারধর সিরিয়ায় ইসরাইলের অবৈধ আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ১২ বছর পর দামেস্কে আবার কার্যক্রম শুরু করল তুর্কি দূতাবাস দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য আমরাই যথেষ্ট : আসাদুজ্জামান রিপন জনগণের অধিকার রক্ষায় বিএনপি ঐক্যবদ্ধ : খন্দকার মুক্তাদির

সকল