১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
৪২ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন

একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব উপেক্ষিত

-

বরিশাল বিভাগের ৪২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে অ্যান্টি ভ্যাকসিন (এআরভি) নেই। প্রতিদিন কুকুরে কামড়ানো অসংখ্য রোগী ভ্যাকসিনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও এর সরবরাহ না থাকায় তাদের বাধ্য হয়ে চড়া দামে ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে। এ সঙ্কট শিগগির সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় বরিশাল বিভাগের জনগণের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। একটি সহযোগী দৈনিকের বরিশাল প্রতিনিধি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন-সঙ্কটের তথ্য এক রকমই। সরকারের সরবরাহে অপ্রতুলতা থাকায় খোলাবাজারে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এতে প্রতিদিন সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন।
বরিশাল নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা শুভজিত জানান, তার থেকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের দাম এক হাজার ৫০০ টাকা নিলেও পরবর্তী ডোজের দাম বেশি চায়। কারণ ফার্মেসি মালিকরা জানে, রোগীকে ডোজ কমপ্লিট করতে হবে। বরগুনার আমতলী উপজেলার সদরের স্কুলছাত্রী সীমা বলে, ‘ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার পথে কুকুর কামড়ায়। হাসপাতালে গেলে তারা জানায়, সেখানে ভ্যাকসিন নেই। আমাকে পটুয়াখালী অথবা বরগুনা সদর হাসপাতালে যেতে বলা হয়।’ বরিশালের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: মোহাম্মদ মাজেদুল হক কাওছার বলেন, ‘আমি হিজলা থেকে বদলি হয়ে এসেছি। সেখানেও ভ্যাকসিন সরবরাহ ছিল না। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চাহিদা জানিয়ে আবেদন করেছিলাম, তবে এখনো কোনো সমাধান হয়নি।’
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে যে সংখ্যক রোগী এসেছিল, এ বছর তার তুলনায় অনেক বেশি রোগী আসছে। রোগীরা চাহিদামতো ভ্যাকসিন না পেয়ে বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছে। বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: এ কে এম নজমুল আহসান জানান, তাদের হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন রয়েছে, তবে প্রতিদিন আসা রোগীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তা সামলাতে কষ্ট হচ্ছে।
ভ্যাকসিন-সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: শ্যামল কৃষ্ণ বড়াল বলেন, ‘ভ্যাকসিনের সরবরাহ কম থাকায় এবং ব্যয়বহুল হওয়ায় সাধারণ মানুষের জন্য এটি কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে আমরা শুধু জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারছি। আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরবরাহ থাকলেও আপাতত নেই।’ কবে নাগাদ এ সঙ্কট কাটবে, সেটিও বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
সরকার দায়িত্বের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না। সরকারকে সবসময় সক্রিয় থাকতে হয়। সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কের ওষুধ নেই। সরকারি হাসপাতালেও এই ওষুধের বড় অভাব। ফলে জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমরা আশা করি, অবিলম্বে বরিশালের দিকে নজর দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement