১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
খাদ্যপণ্যের দামে গরিবের প্রাণ ওষ্ঠাগত

বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা

-

বেঁচে থাকতে মানুষকে খাবার খেতে হয়। ধনী-গরিব-ফকির কারো জীবনে এর ব্যতিক্রম নেই। তাই অপরিহার্য খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লে গরিবের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের মাছে ভাতে বাঙালি বলা হলেও মাছ জোগাড় করা এখন এ দেশে খানিকটা বিলাসিতা। এমনকি অনেকের শাকসবজি জোগাড় করাই সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এর জন্য দায়ী খাদ্য মূল্যস্ফীতি গত বছরের জুলাইয়ের পর অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করা। সরকার দৃশ্যমান চেষ্টা চালালেও বাজার নিয়ন্ত্রণে এর কার্যকারিতা নেই।
একসময় ভাতের বদলে আলু খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হতো। মূলত চালসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের ওপর বাড়তি চাপ কমাতে এমন পরামর্শ দেয়া হতো। এর আরো কারণ ছিল- তখন আলু সস্তায় পাওয়া যেত এবং দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন হয়। তাই তখন এর মূল্য নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালে ছিল। কিন্তু বাজারে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই আলুর দাম ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই করছে। নতুন আলু বাজারে এলেও দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। শুধু আলু নয়, প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দাম অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে, নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে উঠেছে। ১৩ বছরের মধ্যে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি। গত বছর জুলাই মাসে ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এ অবস্থায় প্রান্তিক আয়ের পরিবারগুলো তীব্র সঙ্কটে পড়েছে। গরিব পরিবারকে খাদ্য কিনতে আয়ের দুই-তৃতীয়াংশ ব্যয় করতে হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো পরিবারকে আয়ের পুরোটা শুধু খাদ্য কিনতে খরচ করতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় জীবন ধারণে তাদের নানা উপায় অবলম্বন করতে হচ্ছে। কেউ বাধ্য হয়ে খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে দিয়েছেন, কাউকে নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য অনেক জিনিস বাদ দিতে হয়েছে। অর্থাৎ পরিবারগুলোর জীবনমান নিম্নগামী হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্যা, অতিবৃষ্টি, খরাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে পিষ্ট হয়েছে মানুষ। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের হাতে থাকা সামান্য সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছেন। এ অবস্থায় দেশে অনেকে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়ছেন। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, অদরিদ্র পরিবারের ২০ শতাংশ দরিদ্র হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আমাদের সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ায় আমরা নিত্য খাদ্যপণ্যের বেশির ভাগ নিজেরা উৎপাদন করি। এসব পণ্যের দাম কেন আকাশছোঁয়া হবে, তা সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। যেখানে এক কেজি তরকারি কৃষক ২০ টাকায় বিক্রি করেন; সেটিই শহরে ৮০-১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাকে। এতে উৎপাদক এবং ভোক্তা উভয়ে বড় দাগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে ঘাপলা কোথায় তা চিহ্নিত করতে হবে। মোদ্দাকথা, বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক করা না গেলে খাদ্যপণ্যের লাগামহীন বৃদ্ধি ঠেকানো যাবে না। শহরাঞ্চলে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করলেও তাতে কোনো কাজ হবে বলে মনে হয় না। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। সঙ্গতকারণে খাদ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল করতে হলে সরকারকে কোমর বেঁধে নামতে হবে। এ জন্য পুরো ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
‘আপত্তিকর ভাষা’ ব্যবহারে শাস্তি পেলেন জোসেফ শ্রীমঙ্গলে হত্যা মামলায় প্রেমিক গ্রেফতার জামায়াত নেতা কাজী ফজলুল করিমের মৃত্যুতে ড. রেজাউল করিমের শোক প্রকাশ বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে মাঠে থাকব : মুন্না আমতলীতে ব্যবসায়ীকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় জড়িতদের বিচার দাবি সিরিয়া নিয়ে আশা ও শঙ্কা ইসরাইলের সিরিয়ায় বাশারের পতনে ইসরাইল কতটুকু লাভবান অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের ৫৭৯ কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহত ৫ এ দেশে রাজনীতি করতে হলে জনগণের সেবক হয়েই রাজনীতি করতে হবে : সেলিম উদ্দিন এখন সময় শান্তি ও স্থিতিশীলতার : অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী

সকল