গোড়ায় হাত দিতে হবে
- ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাজধানীর বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সয়াবিন তেলের তীব্র সঙ্কট চলছে। কোথাও কোথাও মোটেই পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে এক ও দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল যেন উধাও হয়ে গেছে। এই সুযোগে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে খুচরা বিক্রেতারা। নির্দিষ্ট মূল্যের থেকে ১৬-২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছে। এমনিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতির জেরে মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ। এর সাথে যোগ হয়েছে সয়াবিনের বাড়তি দাম। অনেকে খোলা তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
কিন্তু এই মুহূর্তে সয়াবিনের সরবরাহ কমে যাওয়া অথবা দাম বৃদ্ধি কোনোটি হওয়ার কথা নয়। বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রেখে জনগণকে স্বস্তি দিতে সরকার সম্প্রতি পাম ও সয়াবিনের আমদানি শুল্ক অনেকটা কমিয়ে ৫ শতাংশে নির্ধারণ করে। প্রতি কেজি ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক কমে ১০-১১ টাকা। তার পরও বাজারে দাম কমেনি- উল্টো বেড়েছে।
সংবাদমাধ্যমে স্বৈরাচার আমলে সক্রিয় সেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দিকে আঙুল তুলছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সমিতির (ক্যাব) নেতারাও বলছেন একই কথা। ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন একটি দৈনিককে বলেন, সঙ্কটের কোনো কারণ নেই। ব্যবসায়ীরা সাপ্লাই বন্ধ করে সঙ্কট সৃষ্টি করেন। তারপর সরকারের কাছে প্রস্তাব দেন দাম বাড়ানোর। এ প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি, এবারো তাই হবে। বিষয়টি সবার জানা। কিন্তু সমস্যা হলো- সরকার কখনো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারে না। কারণ তাতে পুরো বাজার ব্যবস্থার স্থিতি হুমকিতে পড়তে পারে। বিগত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে ব্যবসায়ীদের অন্যায় সুবিধা দিয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সে দায় থাকার কথা নয়। সুতরাং এ সরকারের পক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া সহজ।
ভোজ্যতেলের দাম কেন কমছে না, তা জানতে ব্যবসায়ীদের সাথে সম্প্রতি বৈঠক করেছে ট্যারিফ কমিশন। বৈঠকে ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি জানিয়ে যৌক্তিক দর সমন্বয়ের দাবি জানান। এ বিষয়ে ট্যারিফ কমিশন একটি কমিটি করেছে। কমিটি শিগগির প্রতিবেদন দেবে। তারপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমাদের বলার বিষয় হলো- বাজার নিয়ন্ত্রণের আইনগত ব্যবস্থা প্রয়োগ করা জরুরি। ভোজ্যতেলের মজুদ নিঃশেষ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কোথায় কী পরিমাণ তেলের মজুদ আছে সেটি সরকারকে খুঁজে দেখতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা নিশ্চিতভাবে হয়রানির অভিযোগ তুলবেন। অতীতে বারবার সেটি দেখা গেছে। সরকারকে এসব অভিযোগ উপেক্ষা করার এবং মজুদদার মুনাফাখোর অপরাধীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার সক্ষমতা রাখতে হবে। তা না হলে সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া উপায় নেই।
আগামী মার্চে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এ সময় তেলের সঙ্কট যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসায়ীদের কাছে অসহায় হওয়া চলবে না। তাদের সাথে আলোচনার পাশাপাশি যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশবাসী সরকারের শক্তিশালী অবস্থান দেখতে চায়, সিন্ডিকেটের কবল থেকে অবিলম্বে মুক্তি চান তারা। শুধু ভোজ্যতেল নয়, প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে থাকবে- এটিই প্রত্যাশা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা