প্রশাসনের উদাসীনতাই দায়ী
- ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
একটি জাতীয় দৈনিকের ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনীর সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম জেলার নদী থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত ও উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বালু তোলার মহোৎসব চলছে। জেলায় নতুন করে প্রায় ২০টি স্থানে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত নদীর আশপাশের ভাঙনে ভিটে হারাচ্ছেন অনেক মানুষ, নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি, ঝুঁকিতে রেল ও সড়ক সেতু।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ফেনীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট ও বড় ফেনী নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ ও অবৈধভাবে বালু জব্দ করে লাল পতাকা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেনী জেলার মোট আটটি বালুমহালের মধ্যে পাঁচটির ইজারা হলেও তিনটির ইজারাদার মেলেনি। এর মধ্যে সোনাগাজী উপজেলার দু’টি বালুমহাল ইজারা নেন ফাজিলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুল হক রিপন। ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজীর দু’টি বালুমহালের ইজারা নেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই রফিকুল হায়দার চৌধুরী এবং পরশুরামের একটি বালুমহালের ইজারা নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দফতর সম্পাদক মীর আহমেদ চৌধুরী। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ইজারাদাররা পলাতক।
সরেজমিন দেখা যায়, সোনাগাজী মুহুরী প্রকল্প এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এমনকি মুহুরী রেগুলেটর ব্রিজ ও শুভপুর ব্রিজের কাছ থেকেও বালু তুলতে দেখা গেছে। এতে চরম ঝুঁকিতে আছে নবনির্মিত মুহুরী ব্রিজ ও শুভপুর ব্রিজ। ‘মুহুরী প্রকল্প’ এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পাঁচটি স্থান থেকে হাজার হাজার ঘনফুট বালু তোলা হচ্ছে।
এসব বালুবাণিজ্যে প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকায় স্থানীয় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, বর্তমানে স্থানীয় যুবদলের দু’টি গ্রুপের নেতৃত্বে এখানে বালুমহাল পরিচালিত হচ্ছে যাদের নেতৃত্বে আছেন সোনাগাজীর যুবদলের আহ্বায়ক খুরশেদ আলম ও যুবদলের সদস্যসচিব ইমাম হোসেন প্রবীর। তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, ‘নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ আর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমরা তৎপর রয়েছি। বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জেলার বালুমহালগুলোর ইজারাদারদের বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার জন্য ইতোমধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে।’ ফেনী নদীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ‘অবৈধভাবে কাউকে বালু উত্তোলন করতে দেখলে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রশাসন নীরব থাকতে পারে না। সক্রিয়তাই প্রশাসনের বৈশিষ্ট্য। প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে সারা দেশে বালুমহাল ভক্ষণ চলছে। পদক্ষেপ না নিলে সরকারের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় না। সরকার বা প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে সারা দেশে মাটিভক্ষণ, বালুভক্ষণ ও নদীনভক্ষণ চলছে। আমরা আশা করি, অবিলম্বে সরকার ফেনীর ব্যাপারে নজর দেবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা