পিঠটান দিলেন গভর্নর
- ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০, আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৪৬
আবারো টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংক রক্ষার ব্যবস্থা করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বলা হচ্ছে, এর বিকল্প ছিল না। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এক দিকে লাগামহীন লুটপাটে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়েছে, অন্য দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সেগুলোর প্রাণপ্রদীপ টিম টিম করে জ্বালিয়ে রেখেছে। তখন এর সমালোচনায় মুখর অর্থনীতিবিদরা বলতেন, টাকা ছাপিয়ে দেয়ার ফলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে এবং অর্থনীতির সঙ্কট আরো গুরুতর হবে।
দেশের সাধারণ মানুষ টাকা ছাপানো ব্যাপারটা বোঝেন না। এর সুফল-কুফলও বোঝেন না। তারা অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুসরণ করে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করেন। এ ক্ষেত্রে মানুষের আস্থাভাজন কয়েকজন অর্থনীতিবিদের অন্যতম পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনিই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। গত বছর ১৮ জুন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বাজেট সংলাপে আহসান মনসুর বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা ছাপানো হলে, অর্থনীতিতে যে সঙ্কট চলছে, তা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। বাড়বে মূল্যস্ফীতি। তিনি বলেন, সোমালিয়া, রাশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ এভাবে মুদ্রা ছাপিয়ে চরম মূল্য দিয়েছে।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নেয়ার পর আহসান মনসুর শুরুতে বলেছিলেন, টাকা ছাপিয়ে আর কোনো ব্যাংকে দেয়া হবে না। কিন্তু কয়েক মাসের মাথায় তিনি ‘সাময়িকভাবে’ পিছিয়ে এলেন। টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ছয় ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা দেয়া হলো। এতে ব্যাংকের ওপর গ্রাহকের যে আস্থাহীনতা সৃষ্টি হচ্ছিল তা কেটে যাবে এবং ব্যাংকগুলো দুর্বল অবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে বলে বলা হচ্ছে।
টাকা ছাপানো নিঃসন্দেহে সরকারের জন্য একধরনের বেইল আউট। বিশেষ করে গত সাড়ে ১৫ বছরের নজিরবিহীন অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা আর লুটপাটে পুরোপুরি ধসে যাওয়া অর্থনীতির গতি ফেরাতে এটি দরকার ছিল। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন একটি পত্রিকাকে বলেছেন, ‘বর্তমানে ব্যাংক খাতে একটি উভয় সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এক দিকে ঠিক করলে আরেক দিকে সঙ্কট তৈরি হচ্ছে।’ টাকা ছাপানো সম্ভবত সেই উভয় সঙ্কটের প্রতিফলন।
গভর্নর জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা তার থাকবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতির ধারা বজায় রাখা হবে। তারল্যসঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোকে টাকা দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের বিপরীতে যেসব ব্যাংকের উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে, তাদের কাছ থেকে তুলে নেয়া হবে। ফলে মূল্যস্ফীতিতে তেমন প্রভাব পড়বে না। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাবের বিষয়টি নির্ভর করবে কী পরিমাণ অর্থ বাজারে ঢুকছে এবং কতদিন থাকবে তার ওপর।
তবে এরও আগে দরকার অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফেরানো। অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির শেকড়সুদ্ধ উপড়ে ফেলা। সেই সাথে গ্রাহকের ক্ষতি না করে রাজনৈতিক বিবেচনায় সৃষ্ট দুর্বল ব্যাংকগুলো সময় নিয়ে বন্ধ বা মার্জারের উদ্যোগ হয়তো আরেকটি বিকল্প হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা