০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা

রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জঘন্য নমুনা

-


বিগত সাড়ে ১৫ বছরে খুনখারাবি দুর্নীতি অনাচার দেশে যা-ই ঘটুক শাসকরা যাদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন শুধু তাদের বিচার হয়েছে। এ কারণে বিরোধীরা উৎখাত হয়েছেন। কিন্তু অপরাধীরা হয়েছে বেপরোয়া। নির্দোষকে ফাঁসানো হয় অবলীলায়। শাসকরা এতটা নিচে নামেন যে, নিজের লোকদের লাশ পড়লেও তা থেকে স্বার্থ হাসিল করেন। প্রকৃত দোষীদের বিচারে তাদের কোনো আগ্রহ ছিল না। এমন একটি উদাহরণ হলো ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। ওই মামলায় অপ্রাসঙ্গিক জড়িয়ে দেয়া হয় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের। পর্যাপ্ত দালিলিক প্রমাণ ছাড়া রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একচেটিয়া রায় দেয়া হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বিচারাঙ্গনে পরিবর্তন এনেছে। বিচারকরা কাজের স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বিচারিক আদালতে দেয়া রায়কে উচ্চ আদালত বাতিল ঘোষণা করেছেন। আদালত নতুন যে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন, তাতে পুরনো বিচারে গুরুতর অসঙ্গতির দিকটি উঠে এসেছে। মামলা পরিচালনা প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা করা হয়নি। ক্ষমতার জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে এমন ব্যক্তিকে নিশানা করে মৃত্যুদণ্ডসহ নানা মেয়াদে দণ্ড দেয়া হয়।
উচ্চ আদালত দণ্ডিত সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন। একই সাথে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন। কিছু ব্যক্তির জবানবন্দী ছাড়া অকাট্য প্রমাণ না থাকলেও নিম্ন আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দণ্ড দিচ্ছিলেন। সেই জবানবন্দী তারা দিয়েছেন টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স বা টিএফআই সেলে। এ ধরনের সেলের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তা প্রমাণ হিসেবে গ্রহণের কোনো আইনগত বৈধতা ছিল না। এদের একেকজনকে ৬০ দিন থেকে ২৬১ দিন পর্যন্ত এ অবৈধ সেলে রাখা হয়। নিশানা করা লোকদের ফাঁসাতে এই দীর্ঘ সময় তাদের সেখানে রেখে নতুন প্লট তৈরি করা হয়েছে। আবার এ জবানবন্দীকে ব্যবহার করা হয়েছে বেআইনিভাবে। বিচারিক আদালতে গ্রহণ করার আগে এ জবানবন্দীকে ম্যাজিস্ট্রেট আমলে নিতে হবে, তা করা হয়নি।

মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ডসহ ৪৯ জনকে সাজা দেয়া হয়, তিনি নিজে সেটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। ওই রায়ে শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, এমন লোকও শাস্তি পান, যার সাথে ঘটনার দূরতম সস্পর্কও ছিল না। ভুলভাবে আসামির নাম মিলে যাওয়ায় এটি ঘটে। কিন্তু আদালত শাস্তি দেয়ার সময় তা আর আমলে নেয়ার প্রয়োজনবোধ করেননি।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মামলার একটি। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের প্রধান হাসিনা অল্পের জন্য বেঁচে যান। আইভী রহমানসহ দলটির ২৪ জন নিহত হন। প্রয়োজন ছিল এর কুশীলবদের বিচারের আওতায় আনা। আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকলেও কোনো আন্তরিক প্রচেষ্টা দেখা যায়নি; বরং এই হামলার ঘটনা দিয়ে বিরোধীদের দানবীয় রূপে উপস্থাপনের অপকৌশল নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নিয়েছে।
এই মামলার বেলায় বিচারব্যবস্থাকে হাতিয়ার বানানোর একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। বিগত সরকারের আমলে বড় বড় মামলা পুরোপুরি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে। বিচারব্যবস্থার সাথে জড়িত যেসব লোক এমন অসততা করেছেন; তাদের সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ইফার দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত ঢাকা ওয়াসার কেউ দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা : উপদেষ্টা আসিফ ২২ ফেব্রুয়ারি হাবের নির্বাচন রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে ২ জনকে হত্যা ৪২ লাখ টাকাসহ প্রতারক চক্রের সদস্য গ্রেফতার ডিএমপি কমিশনারের সাথে য্ক্তুরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ তারুণ্যের উৎসবে স্থান পাচ্ছে জুলাই আগস্টের তথ্যচিত্র মৃত্যুবার্ষিকী : রফিকুল ইসলাম আধুনিক অটোমোবাইলস জোন প্রতিষ্ঠার দাবি ওয়েলফেয়ার অব ড্রাইভারস্ এন্ড মেকানিক্সের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা অবমাননার অভিযোগ, আটক ৩ ১০ লাখ টাকার অনুদানের চেক শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর

সকল