০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`
হাসিনাঘনিষ্ঠদের বিদেশে বিপুল সম্পদ

কার্যকর পদক্ষেপ এখনো নেই

-

বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী শাসকশ্রেণী দুর্নীতি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার এক নতুন চূড়া দেখিয়েছে বিশ্বকে। তাদের ঘনিষ্ঠ চক্রের একেকজন সদস্য যে মাত্রায় সম্পদ লোপাট করেছে তা ছোটখাটো দেশগুলোর জাতীয় বাজেটের সমান। একজন এস আলম একটি মাত্র ব্যাংক থেকে ৭৫ হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে। যতটুকু খবর বেরিয়েছে, তিনি সবমিলিয়ে জনগণের এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন। হাসিনার কয়েক ডজন অলিগার্কের মধ্যে এস আলমসহ আরো বেশ কয়েকজন রয়েছেন যারা বড় দাগে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটে বিদেশে সম্পদ গড়েছেন।
তারা বিগত ১৫ বছরে অব্যাহতভাবে উচ্চহারে মুদ্রাপাচার করেছে। দেশী-বিদেশী সংস্থাগুলোর হিসাবে, গড়ে প্রতি বছর অন্ততপক্ষে ৭০ হাজার কোটি টাকা করে অবৈধভাবে পাচার করা হয়েছে। শাসক চক্রের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা নজিরবিহীন এই লুটপাট শুধু নিজেদের একক প্রচেষ্টায় করেছেন তা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়; বরং হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ফ্রি স্টাইলে অর্থ সরাতে পেরেছে।
যখন লুটপাট করে দেশ ফোকলা করা হচ্ছিল- বিষয়টি কেউ জানত না এমন নয়; বরং নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রভাবিত করা হয়েছে। তার অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পরিষদে নিজেদের লোক ঢোকানো হয়। আর্থিক খাতের নিরাপত্তায় নিয়োজিত অন্য রেগুলেটরি বডিগুলো কুক্ষিগত করা হয়। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পদে বসিয়ে দেয়া হয় দলীয় লোক। তারা সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের সুরক্ষা দেয়া দূরের কথা, খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকও লুটপাটের শিকার হয়।
পতিত প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা ইউরোপ-আমেরিকায় বিলাসী জীবনযাপন করছেন। সেখানে তাদের রয়েছে অগাধ সম্পদ। এরা বড় ধরনের কোনো ব্যবসায় করছেন কিংবা উত্তরাধিকার সূত্রে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী এমন নয়। তাহলে কিভাবে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হলেন? এস আলমসহ শাসক চক্রের লুটপাট চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে পতিত সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও আদালতে মামলা করা যায়নি। সংবাদমাধ্যমে করা যায়নি কোনো প্রতিবেদন। লুটেরাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া যায়নি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের আনকূল্যের কারণেই।
ব্রিটিশ পত্রিকা অবজারভার ও বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্যে হাসিনাঘনিষ্ঠ কয়েকজনের ৩৫০টি সম্পত্তি রয়েছে। কেবল সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারেরই যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত তিন শতাধিক সম্পদ রয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, নাসা গ্রুপের মালিক ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের বিপুল সম্পদের খোঁজ দেশটিতে পাওয়া গেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও হাসিনাঘনিষ্ঠ লোকদের আরো বিপুল সম্পদ রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার মুদ্রাপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নিলেও হাসিনার পরিবার ও তার ঘনিষ্ঠ লোকদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বিশেষ করে তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশের মাটিতে বিপুল সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়নি। এদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করতে হবে। লুটপাট চক্রের শিরোমণিদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া গেলে পরবর্তী সময়ে বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
তদন্ত প্রতিবেদনসহ আমু-কামরুলকে ১৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেশের ৬৯ কারাগারের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ : কারা মহাপরিদর্শক আমরা হিন্দু-মুসলমান একসাথে লড়াই করে দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দেবো : রিজভী আজমির শরিফ : খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহের ইতিহাস জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও আমেরিকার বাকবিতণ্ডা ‘শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে’ পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১২ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর দেনার দায়ে শক্ত অবস্থান হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র? বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে : প্রধান উপদেষ্টা নতুন মামলায় আনিসুল-ইনু-রাশেদ-পলকসহ গ্রেফতার ৯ যুবদল নেতা শামীম হত্যা : আ.লীগের রোকেয়া-মোস্তফা রিমান্ডে

সকল