বিকৃত যৌনাচার দায়ী
- ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আন্তঃযোগাযোগ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের এক দেশ থেকে আরেক দেশে মরণব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। হোক তা সংক্রামক কিংবা অসংক্রামক। তেমন একটি রোগ এইচআইভি-এইডস। এটি হলো একধরনের ভাইরাস। ইংরেজিতে হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস। এই ভাইরাস মানুষের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে শরীর তা রোধ করতে পারে না। এই অবস্থাটিকে বলে এইডস। তবে এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ করলে, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সুচ-সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে, আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক করলে এইচআইভি ভাইরাস ছড়ায়। এ ছাড়া মা থেকে গর্ভাবস্থায় প্রসবের সময় অথবা বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে সন্তান আক্রান্ত হতে পারে।
বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। সেই থেকে দেশে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অব্যাহতভাবে বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, গত পাঁচ বছরে এইচআইভি সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য- দেশে ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত শনাক্ত হয় ১২ হাজার ৪২২ জন। ইউএনএইডসের অনুমিত হিসাবে দেশে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১৪ হাজার। সংক্রমিত ব্যক্তির তুলনায় শনাক্তের হার ৮৮.৭২ শতাংশ। সংক্রমিত সাত হাজার ৫০০ জনকে চিকিৎসার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এখনো প্রায় দুই হাজার চিকিৎসার বাইরে। তাদের ঝুঁকি অনেক বেশি।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার পালিত হয়েছে ‘বিশ্ব এইডস দিবস’। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল, ‘অধিকার নিশ্চিত হলে, এইচআইভি/এইডস যাবে চলে’।
তথ্য-উপাত্ত ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, একসময় অভিবাসী কর্মী ও শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হলেও চলতি বছর নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সমকামীর হার বেশি। সাধারণ মানুষের বেশির ভাগ আক্রান্ত হচ্ছেন বিদেশফেরত প্রবাসী শ্রমিকের মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরে নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছে এক হাজার ৪৩৮ জন। তাদের মধ্যে ৪২ শতাংশ সমকামী, ২৪ শতাংশ সাধারণ মানুষ ও ১০ শতাংশ রোহিঙ্গা। প্রবাসী শ্রমিক, যৌনকর্মী, মাদকসেবী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব রোগীর ৬৩ শতাংশ ২৫-৪৯ বছর বয়সী, ২১ শতাংশের বয়স ২-২৪ বছর।
এইডস বিষয়ে জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা: শ্রীবাস পাল একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, ‘১০ বছর আগে এইডসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল যৌনকর্মী ও তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্কে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে; কিন্তু গত দু-তিন বছরে সমকামী পুরুষের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।’ তিনি আরো জানান, দেশের সমকামীরা অনলাইনে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করে। পরে দেখা-সাক্ষাতের মাধ্যমে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এদের এইডস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
উল্লেখিত তথ্য থেকে বোঝা যায়, আসলে কেন এইডসে আক্রান্ত হচ্ছেন কোনো ব্যক্তি। যে যেভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করুন না কেন, প্রায়ই দেখা যায়, এটি মূলত অবাধ ও বিকৃত যৌনাচারের বিষফল। হাতেগোনা অল্প ক্ষেত্রে এ ভাইরাসে শুদ্ধ জীবনযাপনে অভ্যস্ত কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ একটি মুসলিমপ্রধান ও রক্ষণশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এত এইডস রোগী থাকার কথা নয়। তবু এ রোগে সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এতে বোঝা যায়, অবাধ যৌনাচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন অনেকে। আর সমকামিতার মতো জঘন্য যৌন বিকৃতিও ঘটছে। পবিত্র কুরআনের বর্ণনা মতে, এই অপকর্মে অভ্যস্ত হওয়ায় আল্লাহ একটি জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছেন।
আমরা মনে করি, এ দেশে এইডস নিয়ন্ত্রণে সর্বপ্রথম শুদ্ধ জীবনাচারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে, যাতে তারা সুস্থ থাকেন; অন্যকে সংক্রমিত করতে না পারেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা