০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`
ঢাকার বায়ুদূষণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি

নগরবাসীকে বাঁচান

-

আয়তনের তুলনায় বেশি জনসংখ্যার ঢাকা মহানগরীতে বায়ুদূষণ একটি পুরনো সমস্যা। পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুদূষণে মূলত তিনটি কারণ দায়ী। যার মধ্যে রয়েছে- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণকাজের ধুলা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) ২০২৩ সালের বছরভিত্তিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে বায়ুদূষণে বাংলাদেশ এক নম্বরে। আগে এই স্থানে ছিল নয়াদিল্লি। আইকিউএয়ারের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ঢাকার বায়ুমান সূচক ছিল ১৫০, যা ২০২৩ সালে ১৭১ হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে ইদানীং ঢাকায় বায়ুদূষণের তীব্রতা ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। অথচ বায়ুদূষণ রোধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।
অত্যধিক বায়ুদূষণে ঢাকাবাসী চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুদূষণে মানুষের শ্বাসতন্ত্রের রোগ বেড়েছে। ঘরে ঘরে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আক্রান্তদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালেও। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বহির্বিভাগে রোগী ছিল ৩৮০ জন। পরদিন বুধবার রোগী বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫০ জনে। ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৮০ জন। বৃহস্পতিবার বেড়ে হয় ১০১ জন। হাসপাতালটির চিকিৎসকরা বলেছেন, বহির্বিভাগে যত রোগী সেবা নিচ্ছেন, তাদের প্রায় ৯০ শতাংশ ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা। ভর্তি রোগীদের প্রায় ৭৫ শতাংশ ঢাকায় থাকেন।
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে অতীতে সরকারের নেয়া কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পগুলো ছিল সব লোক দেখানো। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দীর্ঘ দিন ধরে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ঢাকার বায়ুর মানের উন্নতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি স্থাপনা নির্মাণে পোড়া ইটের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বলেছি। ফিটনেসবিহীন যানবাহনকে ছয় মাস সময় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নতুন বাস নামানোর ব্যবস্থা নিতে পরিবহন মালিকদের বলা হয়েছে। ঢাকার ধুলাবালু কমাতে রাস্তায় পানি দিতেও বলেছেন তিনি।
দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা মূলত ঢাকায় কেন্দ্রীভূত। তাই বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তন করা না গেলে ঢাকার মানুষ কমানো সম্ভব নয়। যেহেতু রাতারাতি দেশের উন্নয়ন দর্শন বদলানো যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি কাজ। তাই ঢাকার বিদ্যমান জনসংখ্যা ও অবকাঠামো বিবেচনায় নিয়েই আমাদের পরিবেশ রক্ষার টেকসই উপায় বের করতে হবে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বায়ুদূষণের দৃশ্যমান উৎসগুলো জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করতে হবে। তা না হলে বায়ুদূষণে অধিক হারে ঢাকাবাসীর মৃত্যুর কারণ হবে। সংবাদ সংস্থা এএফপি সিঙ্গাপুরের নানিয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনটিইউ) এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে বলেছে, বিশ্বে প্রতি বছর বায়ুদূষণে ১৩ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। আর স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, বাংলাদেশে বায়ুদূষণে বছরে মানুষ মারা যায় ৮০ হাজার।
আমাদের প্রত্যাশা সরকার বায়ুদূষণের ভয়াবহতা গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেবে। ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বাযুদূষণের কারণে সৃষ্ট চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে ঢাকাবাসীকে রক্ষা করবে।


আরো সংবাদ



premium cement
সাভারে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী তদন্ত প্রতিবেদনসহ আমু-কামরুলকে ১৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেশের ৬৯ কারাগারের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ : কারা মহাপরিদর্শক আমরা হিন্দু-মুসলমান একসাথে লড়াই করে দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দেবো : রিজভী আজমির শরিফ : খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহের ইতিহাস জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও আমেরিকার বাকবিতণ্ডা ‘শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে’ পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১২ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর দেনার দায়ে শক্ত অবস্থান হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র? বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে : প্রধান উপদেষ্টা নতুন মামলায় আনিসুল-ইনু-রাশেদ-পলকসহ গ্রেফতার ৯

সকল