নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা
- ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। মাঝে মধ্যে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। মশাবাহিত রোগ সংক্রমণের আগে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এই রোগ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের তারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে না বলেই রোগের বিস্তার ঘটছে। যেমন- দেশে গত বছর পাঁচজন জিকা রোগী শনাক্ত করে আইসিডিডিআর,বি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখাকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতর তখন তা প্রকাশ করেনি। আবার সতর্কতামূলক কোনো ব্যবস্থা কিংবা চিকিৎসারও ব্যবস্থা নেয়নি।
গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, ঢাকায় গত তিন মাসে আটজনের শরীরে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এডিস মশাবাহিত জিকা রোগ দেশে প্রথম শনাক্ত হয় ২০১৪ সালে। দেশে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কাজী তারিকুল ইসলাম বলেন, জিকা শনাক্ত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বড় ধরনের সতর্কসঙ্কেত। চিকিৎসা ও প্রতিরোধ বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে, কাজ করতে হবে।
গবেষকরা বলছেন, জিকার পাশাপাশি ঢাকা শহরে এখন চিকুনগুনিয়ায় অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এর অর্থ, ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া- এই তিন রোগে ঢাকাবাসী আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনটি রোগই ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। উদ্বেগের বিষয় হলো, ঢাকার বাইরের ডেঙ্গুর তথ্য থাকলেও জিকা ও চিকুনগুনিয়ার পরিস্থিতি কী, তা জানার কোনো ব্যবস্থা নেই। সহজেই অনুমেয়, দেশের জনস্বাস্থ্য দিন দিন নতুন নতুন হুমকিতে নাজুক হয়ে পড়ছে। এমনিতে দেশে ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বেগের শেষ নেই। তার ওপর জিকা এবং চিকুনগুনিয়া যদি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে তা মোকাবেলা করা দুঃসাধ্য হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের গত বুধবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি মাসের ২৭ দিনে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু এটি। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৮৯ হাজার ৬০৩ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। তখন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ২১-২৫ বছর বয়সীরা। আর বেশি মৃত্যু হয়েছে ২৬-৩০ বছর বয়সীদের। লক্ষণীয়, তরুণরা এ রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করায় দেশের কর্মক্ষম মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে ডেঙ্গু।
মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে পরিকল্পিত এবং সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মশাবাহিত রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার আগেই শহরাঞ্চলের পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনগুলোকে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থাৎ শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বৃষ্টির মৌসুম আসার আগেই মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। সারা বছর মশার ওষুধ ছিটাতে হবে, যাতে কোনোভাবে মশার বংশবিস্তার না ঘটে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা