সবার দায়িত্বশীল আচরণ কাম্য
- ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
জুলাই বিপ্লবে বাংলাদেশের মানুষ নতুন এক স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছেন। এ বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনে বিপুল সুযোগ ও সম্ভাবনা এনে দিয়েছে। তবে এর সঠিক ব্যবহার করা না গেলে আরেক দুর্যোগ জাতীয় জীবনে নেমে আসতে পারে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর পর প্রতিবাদ বিক্ষোভের অবাধ সুযোগ মিলেছে। দেখা যাচ্ছে, একটি শ্রেণী এর মাত্রাজ্ঞানহীন প্রকাশ ঘটাচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকায় নানা শ্রেণী-পেশার নামে রাস্তা অবরোধ, হামলার মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা করা হচ্ছে। এতে শুধু জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে এমন নয়; চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমকেও বড় দাগে ব্যাহত করছে।
রোববার সপ্তাহের প্রথম দিনে একযোগে ঢাকা ও এর আশপাশে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অরাজকতা লক্ষ করা গেছে। উচ্চ আদালতের রায় ঘিরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা রাস্তায় নেমে আসেন। সকাল থেকে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জড়ো হয়ে দাবি-দাওয়া জানাতে থাকলে রাজধানীবাসী তীব্র যানজটের কবলে পড়েন। এতে জনদুর্ভোগ চরমে ওঠে। এ ছাড়া শহরের প্রবেশপথ গাবতলী ও যাত্রাবাড়ীতে অবরোধ করায় রাজধানীতে যানবাহন ঢুকতে বাধা পায়, এতে দূরপাল্লার যাত্রীরা চরম অসুবিধায় পড়েন।
ব্যাটারিচালিত শ্রমিকের নামে এ আন্দোলনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের দেখা গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অটো বা ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিকদের বড় অংশ পতিত সরকারের লোকজন ও ফ্যাসিবাদী সরকারের সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য। তারা সরকারকে যেকোনোভাবে বেকায়দায় ফেলতে চায়। ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে প্রশাসনিক কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না; কিন্তু উচ্চ আদালতের রায়ের পর দাবি আদায়ের নামে এই বিশৃঙ্খলার সুযোগ পান তারা। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বড় অংশ নিম্নবিত্ত। তাদের বিকল্প আয়ের পথ না দেখিয়ে রাস্তায় নিষিদ্ধ করা হলে এর প্রতিক্রিয়া হওয়া স্বাভাবিক। অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই যখন হিমশিম খাচ্ছে; তখন এ ধরনের একটি বড় ইস্যু সামনে নিয়ে আসা বিবেচনাপ্রসূত হয়েছে কিনা তা ভাবার বিষয়।
অন্য দিকে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকার একটি কলেজের এক ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি কলেজের ছাত্ররা পুরান ঢাকায় দফায় দফায় হামলা চালালে পুরো এলাকা অচল হয়ে পড়ে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের প্রথমবর্ষের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা বাতিল করতে হয়। পরের দিন সংঘর্ষ আরো গুরুতর আকার ধারণ করে, হতাহতের ঘটনা ঘটে। এখানে ছাত্ররা দুই দলে বিভক্ত হয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ ধরনের ঘটনা আমরা প্রায়ই ঘটতে দেখছি। তারুণ্যের শক্তিকে ভুল পথে পরিচালিতের উদাহরণ এসব। এ সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারও বিক্ষোভ দমনে বল প্রয়োগে শিথিলতা অবলম্বন করছে। একটি শ্রেণী এটিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ হিসেবে নিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন উছিলায় সড়কে বিশৃঙ্খলা করছেন একদল লোক। প্রায় প্রতিটি ঘটনায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের কারণ রয়েছে। তবে এর সুযোগ নিচ্ছে পতিত সরকারের দোসররা।
দাবি আদায়ের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে জুলাই বিপ্লবকে বেহাত করে দিতে পারে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা। তাই দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীদের অধিকতর সচেতনতা দরকার। খেয়াল রাখতে হবে ফ্যাসিবাদ আবার রাষ্ট্রব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণের অবকাশ পেলে; এত প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিপ্লব ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। তখন প্রতিবাদ বহু দূরের কথা, ফের চড়া মূল্য দিতে হবে। সঙ্গত কারণে সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্বশীল আচরণ কাম্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা