জাতীয় নিরাপত্তা উপেক্ষিত
- ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শত্রুভাবাপন্ন প্রতিবেশী পরিবেষ্টিত বাংলাদেশের জন্য চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ এ বন্দর দিয়ে সম্পন্ন হয়। এটি দেশের লাইফলাইন। এটি আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হলেও পতিত হাসিনা এর নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম গাফিল ছিলেন। এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তুলে দিতে চেয়েছেন বিদেশীদের হাতে। অন্যদিকে দেশের বাণিজ্য সামাল দিতেই এই বন্দর যখন হিমশিম খাচ্ছিল; তখন ভারতকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়। বন্দর ব্যবস্থাপনার অবশিষ্টাংশ নিয়ে এখনো তেমন মনোযোগ নেই বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে সৌদি এক অপারেটরের হাতে তুলে দেয়া হয়। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা পিপিপির আওতায় কাজটি পেতে প্রতিবেশী ভারত নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে। কোম্পানিটির সাথে চীনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে; এমন কারণ দেখিয়ে প্রথমে কাজটি পেতে বাধা দেয়া হয়। পরে কোম্পানিটির মালিকানা পরিবর্তন করে নতুন অবয়বে সামনে আনা হয়। তারপর সেটি পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পায়। এখন এ কোম্পানির শীর্ষ পদে রয়েছেন প্রতিবেশী দেশের নাগরিকরা। পতিত সরকার শেষ সময়ে এসে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালও বিদেশীদের হাতে তুলে দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
মাফিয়া সরকারের আমলে দেশে যেভাবে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের হিড়িক পড়েছিল; একইভাবে বৃহৎ সরকারি অর্থ আহরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা নিয়ে অশুভ তড়িঘড়ি প্রবণতা দেখা যায়। এগুলো ইজারা দেয়া কিংবা নিজেদের পছন্দের লোকদের কাছে হস্তান্তর করতে সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা অত্যন্ত উৎসাহী ছিলেন। এ ধরনের কাজে বিপুল অঙ্কের অর্থ ঘুষ পাওয়া যায় বলে এমনটি তারা করতেন। এ জন্য জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে। এর অংশ হিসেবে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালও লক্ষ্য বানানো হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সেই ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে। পিপিপির আওতায় এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড। এ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত রয়েছে বিগত সরকারের রাঘববোয়ালরা। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক মেরিটাইম সংক্রান্ত এসব বৃহৎ কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ আমাদের প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের হাতে।
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা আমাদের জাতীয় স্বার্থে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। যেখানে এ বন্দর ঘিরে আরো কিছু রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। এবার সরকার পরিবর্তনের পর বন্দর ও এর আশপাশে রহস্যময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে তেলবাহী জাহাজ ছিল; যাতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া বিপুল সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। বন্দরের আশপাশে নৌবাহিনীর ঘাঁটি ও স্থাপনা রয়েছে। সুতরাং চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশীদের কাছে ন্যস্ত কোনোভাবেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বিশেষ করে প্রতিবেশীরা যখন শত্রুভাবাপন্ন; এই অবস্থায় তাদের সাথে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কাউকে এর ব্যবস্থাপনায় যুক্ত করা হবে আত্মঘাতী।
এমনিতেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশীয় পণ্য আমদানি-রফতানিতে হিমশিম খাচ্ছে। দীর্ঘ কনটেইনার জট লাগছে। দিনের পর দিন বন্দরে নোঙর ফেলে থাকতে হচ্ছে জাহাজকে। এতে করে পণ্য পরিবহন ব্যয় বাড়ছে। তার পরও ফ্যাসিস্ট হাসিনা দু’টি সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেন ভারতকে।
আমরা মনে করি, আমাদের কনটেইনার-টার্মিনালের ব্যবস্থাপনা তাদের হাতে দিতে হবে; যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও শ্রদ্ধাশীল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা