বিলম্বিত পদক্ষেপ বিচারে ব্যাঘাত ঘটাবে
- ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পতিত শেখ হাসিনা সামরিক বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলায় নিযুক্ত বাহিনীর একটি অংশকে গুরুতর অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার করেছেন। গুম খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তিনি শাসন দীর্ঘায়িত করেছেন। শত শত মানুষ যখন নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন তিনি শুধু অস্বীকার করে এটি এড়িয়ে গেছেন। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন জাতিসঙ্ঘসহ প্রভাবশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর আবেদনকে কোনো তোয়াক্কা করেননি। গণ-অভ্যুত্থান এক নতুন আবহের সৃষ্টি হয়েছে, আশা জাগছে হয়তো এবার বিচার পাওয়া যাবে। গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগে সামরিক কর্মকর্তাসহ ২২ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। বাস্তবে মানবাধিকার লঙ্ঘন সারা দেশে বিস্তৃত পরিসরে ঘটেছে। এর সাথে যুক্ত ছিলেন অনেক মানুষ। একটি উপযুক্ত বিচার করতে হলে তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তালিকায় পাওয়া বেশির ভাগ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের লোক। তাদের প্রায় সবাই সামরিক বাহিনীর সদস্য। এ দিকে বেশি করে বলা হচ্ছে আয়নাঘরের কথা। গুম বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ কয়েক হাজার গুরুতর অপরাধ হাসিনার আমলে সংঘটিত হয়েছে, এতে র্যা ব এবং পুলিশ ও এর বিশেষায়িত বাহিনীগুলো জড়িত ছিল। কিছু ক্ষেত্রে যুক্ত ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বেসামরিক প্রশাসনের একটি অংশ। ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরসহ সারা দেশে আরো বেশ কিছু গুপ্ত কারাগার ও নির্যাতনকেন্দ্র ছিল। তাই এই অপরাধের মাত্রাগত দিক এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধীর সংখ্যাও অনেক বেশি ছিল। র্যা ব ছাড়াও বিভিন্ন নামে পুলিশের সৃষ্টি হওয়া বাহিনীগুলো ব্যাপক মাত্রায় এ অপরাধ করেছে।
নতুন সরকারের ১০০ দিনের বেশি সময় লেগেছে অপরাধীদের ক্ষুদ্র অংশটিকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে। এরই মধ্যে পালিয়েছে বড় বড় অপরাধীরা। সামরিক বাহিনীর একটি অংশকে খুনে বানানোর মূল হোতা ছিল তারিক সিদ্দিকী। তিনি গুপ্ত কারাগার তৈরির হোতা। এভাবে পুলিশ ও বেসামরিক প্রশাসনে থাকা বড় বড় অপরাধী হয় পালিয়েছেন নয়তো আছেন বহালতবিয়তে। দেশে থাকা এসব অপরাধী নতুন পরিস্থিতিতে মিশে যাওয়ার ধান্দা করছেন। ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করায় আশঙ্কা জাগছে- হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবেন। গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর বিশেষত এসব সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে।
সরকারের প্রভাবশালী এক উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার একটি কঠিন কাজ। এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কারণ সামরিক বাহিনী ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের একটি অংশ বিচারের আওতায় আসবে। জুলাই বিপ্লবের শুরুতে তাদের বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। ইতোমধ্যে সরকারের ভেতরের একটি অংশ থেকে সাহায্য পেয়ে অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আরেকটি গোষ্ঠী নিজেদের অপরাধ ধামাচাপা দিতে নিজেদের পদ-পদবি ও প্রভাব ব্যবহার করছেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অপরাধের বিচার করা না গেলে দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা খুব কঠিন হবে। অপরাধীদের অবশিষ্টাংশ যেকোনো সময় জাতীয় বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং যেকোনো মূল্যে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা