উন্নয়নের নমুনা!
- ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দৈনিক নয়া দিগন্তের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শৈলদাহ নদীর ওপর সেতু পার হওয়ার জন্য মই বেয়ে উঠতে হয় এলাকাবাসীকে। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ১২ বছর আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় এক দিনের জন্যও সেতুর ওপর দিয়ে কোনো যানবাহন চলেনি। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা সেতুর একপাশে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু বাঁশের মই লাগিয়েছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ খাড়া মই বেয়ে লোকজনকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নদী পারাপার হতে হচ্ছে। নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে অপরিকল্পিতভাবে ধানক্ষেতের পাশে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতুর সংযোগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। বছরখানেক আগে জমি অধিগ্রহণ করে সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হয়। তবু প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকায় নির্মিত এ সেতুর সুফল কবে পাওয়া যাবে সেই প্রশ্ন এলাকাবাসীর। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অচিরেই এর সমাধান হবে।
সেতুর এক পাশে রয়েছে ডুমুরিয়া উচ্চবিদ্যালয়, ডুমুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, ডুমুরিয়া বাজার ও ডুমুরিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক। আর অন্য পাশে ডুমুরিয়া উত্তরপাড়া হয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা সড়ক।
নদীর ওপর নির্মিত সেতুর উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। দুই পাশে সংযোগ সড়ক নেই। তাই খাড়া মই বেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুতে ওঠা-নামা করে নদী পারাপার হতে হয়ে এলাকার শিশুশিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত নানা বয়সী নারী-পুরুষকে।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুনের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ শেষ করার কথা ছিল। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছর পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় মেয়াদেও কাজ শেষ হবে কি না সন্দেহ এলাকাবাসীর।
সেতুটি চালু হলে শুধু চলাফেরায় নয়, স্থানীয় কৃষিপণ্য বিপণন, ব্যবসায়-বাণিজ্যসহ নানাভাবে সমৃদ্ধ হবেন এলাকাবাসী। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের একজন জনপ্রতিনিধি বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে না পারায় নদীর দু’পাশের লোকজন সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। পণ্য পরিবহনে এখনো অতিরিক্ত পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এখন সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ চললেও তাতে লোহার পাইপ ও স্টিল শাটারিংয়ের পরিবর্তে গাছের বল্লি ও কাঠ ব্যবহার করে কংক্রিট ঢালাই দেয়া হচ্ছে। গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এহসানুল হক বলেন, মানসম্মতভাবে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে।
উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু মানুষ। যে উন্নয়ন মানুষের উপকার করে না তাতে যত অর্থই ব্যয় করা হোক না কেন, সেটিকে কোনোভাবেই উন্নয়ন বলা যায় না। টুঙ্গিপাড়ার শৈলদাহ নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু প্রকল্পও তেমনই উন্নয়নের নামে কেলেঙ্কারি মাত্র। এই প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবশ্যই জবাবদিহির মুখোমুখি করা উচিত। জনগণের অর্থ ব্যয় করে জনগণের উপকার করার নামে বছরের পর বছর ভোগান্তির শিকারে পরিণত করা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
আমরা আশা করি, সরকার অবিলম্বে এর প্রতিকারে যথাবিহিত উদ্যোগ নেবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা