১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ভেঙেছে ২৮ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করুন

-

একটি সহযোগী দৈনিকের মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরের শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদ থেকে বালু তোলার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত ২ নভেম্বর শিবচরের বহেরাতলা-কলাতলা পয়েন্টে বাঁধের একাংশ ভেঙে যায়। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদপাড়ে বসবাসকারীরা। একটি সহযোগী দৈনিকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে এলাকাবাসীর বরাতে আরো বলা হয়েছে, শুধু কলাতলা পয়েন্টেই নয়, শিবচরের কাঁঠালবাড়ি, চরজানাজাতসহ একাধিক স্থানের চিত্র একইরকম। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে শিবচরের চরজানাজাত ইউনিয়নের কমপক্ষে পাঁচটি ওয়ার্ড নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন হুমকিতে কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নসহ ১০টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। বছরের পর বছর পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে ইজারা ছাড়াই অবাধে বালু উত্তোলন করে অনেকেই অবৈধ টাকার পাহাড় গড়েছেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। হুমকির মুখে পড়েছে নদের পার্শ্ববর্তী চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি, বন্দরখোলা, মাদবরেরচরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা। মাদারীপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের খান বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে শিবচরে প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি বেড়িবাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সামনে আরো ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। এক বালু ব্যবসায়ী জানান, পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়ার নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেছে কয়েকজন। এরা অনুমতির ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে বিভিন্ন জনকে দিয়ে বালু উত্তোলন করায়। তবে অভিযুক্তরা বালু উত্তোলনের ভুয়া কাগজপত্র বানানো ও বালু উত্তোলনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মাদারীপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে জানায়, কার্যালয় থেকে বালু উত্তোলনের কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও জেলা প্রশাসনের মুখপাত্র নাজমুল হোসেন বলেন, মাদারীপুরে কাউকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। চরজানাজাত এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে আমাদের গ্রাম হুমকির মুখে। রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করে। কিছু বলতে গেলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ বালুমহাল গড়ে তোলা হয়েছে। বালু দখল, চর দখল, মাটি দখল, পানি দখল সবকিছু অবৈধ ক্ষমতার সৃষ্টি। আর ক্ষমতা বৈধ হলেও সাথে অনিয়ম স্বজনপ্রীতি দুর্নীতি জড়িত থাকে। এই ক্ষমতার ভেতরে অবৈধ রাজনীতি। যাই হোক, অবৈধ ক্ষমতার ভিত্তি যা-ই হোক না কেন, প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। আমরা আশা করি, অবিলম্বে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।


আরো সংবাদ



premium cement