২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য লাউঞ্জ

একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ

-

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের জন্য একটি বিশেষ লাউঞ্জ চালু করেছে সরকার। এতে সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। বিশেষ লাউঞ্জে প্রবাসী কর্মীদের জন্য থাকছে বিশ্রাম, ইন্টারনেট সুবিধা, বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শসেবা প্রদান এবং সরকারি ভর্তুকিতে সুলভ মূল্যে খাবারের সুব্যবস্থা। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে ড্রপ-অফ অঞ্চলে যাত্রী ও পরিবারের সদস্যদের বিশ্রামের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রায় এক হাজার আসনবিশিষ্ট আরেকটি লাউঞ্জের ব্যবস্থা করছে। বিমানবন্দরে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ লাউঞ্জ করে দেয়া নিঃসন্দেহে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
লাউঞ্জ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেন। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। বিমানবন্দরে প্রবাসীরা যথাযথ সম্মান ও সেবা পান না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রবাসীরা এখানে মেহমানের মতো থাকবেন, সম্মান নিয়ে থাকবেন। অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যও উৎসাহব্যঞ্জক। তিনি বলেছেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আমরা বিমানবন্দরে প্রবাসী শ্রমিকদের ভিআইপি সেবা দিতে বদ্ধপরিকর।
আমরা বিমানবন্দরের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিফলন দেখতে চাই। প্রবাসীরা বছরে যে রেমিট্যান্স পাঠান তা দুই হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি। যা দেশীয় মুদ্রায় দুই লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার সমান। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ সমৃদ্ধ করে প্রবাসীদের পাঠানো এই অর্থ। অর্থনীতির দ্বিতীয় প্রধান জোগান আসে রেমিট্যান্স থেকে।
জুলাই-আগস্টে দেশে যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে তখন জীবন-জীবিকার তোয়াক্কা না করে প্রবাসীরা যার যার অবস্থান থেকে সেই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। বাংলাদেশের আন্দোলনের সমর্থনে বিবেকের তাড়নায় বিক্ষোভ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) নানা মেয়াদে সাজার মুখোমুখি হয়ে জেল খেটেছেন ৫৮ জন বংলাদেশী। পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান তাদের ক্ষমা করে দেন, যা ছিল সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশীসহ সব বাংলাদেশীর জন্য পরম আনন্দের। ফ্যাসিবাদী শক্তির উৎখাতে রেমিট্যান্সকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আন্দোলনের সময় প্রবাসীরা যে ভূমিকা পালন করেন তা ছিল আন্দোলনকারী মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার জন্য বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার উৎস। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্বের যে দেশেই প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধারা কারাবন্দিত্বসহ নানাবিধ সমস্যায় ভুগছেন তাদের সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন। একই সাথে তিনি তার ব্যক্তিগত ইমেজ কাজে লাগিয়ে প্রবাসে বাংলাদেশীদের শ্রমবাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যারও মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন। যার নজির দেখা গেল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে।
বিমানবন্দরে প্রবাসীদের বিশেষ লাউঞ্জের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ এই উদ্যোগের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।


আরো সংবাদ



premium cement