বিপ্লবের চেতনা ধারণ গুরুত্বপূর্ণ
- ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লব সমসাময়িক বিশ্বে এক নজিরবিহীন ঘটনা। এর ভিত্তি রচনা করেছেন দেশের আপামর জনগোষ্ঠী, যাদের ওপর ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা সাড়ে ১৫ বছরে সীমাহীন পীড়ন চালিয়েছেন। এ সময়ে বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ গুম খুন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন। ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়ে অসম্মানজনক জীবনযাপন করেছেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশে সাধারণ কোনো ক্ষমতার পালাবদল হয়নি। ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার উৎপাটন করেছেন ছাত্র-জনতা। সে কারণে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। এ কাজ তারাই করতে সক্ষম, যারা ফ্যাসিবাদে পিষ্ট হয়েছেন। বাস্তবে সরকার পরিচালনায় এই চেতনাসমৃদ্ধ ব্যক্তি সুযোগ কম পাচ্ছেন। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে জড়তা ও গতিহীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবের চেতনার সাথে তালমিলিয়ে চলতে হোঁচট খাচ্ছে- এ ধরনের একটি আলোচনার মধ্যে নতুন আরো তিন উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হলো। মূলত মন্ত্রণালয়গুলো বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত করে কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার প্রয়োজনীয়তার কথা চার দিক থেকে বলা হচ্ছিল। শুরুতে সরকার হোঁচট খায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ে। পরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। শেখ হাসিনা পুলিশকে জনগণের শত্রুতে পরিণত করেন। এ বাহিনীর অতি উৎসাহী একটি অংশ জনগণের জানমাল রক্ষার বদলে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। বিপ্লবের চূড়ান্ত দিনগুলোতে প্রাণঘাতী অস্ত্রের বেপরোয়া ব্যবহারে দুই হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি। তাদের মধ্যে অঙ্গহানি ঘটেছে অনেকের।
পুলিশ গণশত্রুতে পরিণত হওয়ায় ৫ আগস্ট পরবর্তী পুরো বাহিনী উধাও হয়ে যায়। নাজুক এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব যাকে প্রথমে দেয়া হয় সেই তিনি এমন মন্তব্য করেন, যাতে সদ্য পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদীরা আশকারা পায়। পরে তাকে পরিবর্তন করা হলেও এ মন্ত্রণালয় এখনো সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
আমাদের মনে রাখতে হবে, পতিত স্বৈরাচার কোনো ধরনের সুযোগ পেলেই বিপ্লবের প্রথম সারির নেতাদের বেকায়দায় ফেলতে চাইবে। এ দিকে অন্তর্বর্তী সরকারে থেকেও উপদেষ্টাদের অনেকের এমন শঙ্কা নেই। লক্ষণীয়, তারা ফ্যাসিবাদী শাসনের পুরো সময়ে কোনো পীড়নের শিকার হননি। এসব কারণে আওয়াজ উঠেছে বিপ্লবের চেতনার সাথে তালমিলাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।
কারা উপদেষ্টা বাছাই করছেন সেটি নিয়ে মৃদু সমালোচনা রয়েছে। যখন যোগ্য, গতিশীল ও বিপ্লবের শতভাগ চেতনা ধারণকারী উপদেষ্টা নিয়োগের তাগিদ আসছিল- এখন আরো তিনজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হলো। এর মধ্যে এমন একজন রয়েছেন, যার স্ত্রী শেখ মুজিবের বিতর্কিত বায়োপিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে যখন বলা হচ্ছে বিপ্লবের চেতনা ধারণের; তখন এমন কর্নার থেকে উপদেষ্টা নিয়োগ কিছুটা হতাশা ছড়ায়।
ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বাংলাদেশ। দেশে এখন ব্যাপক পুনর্গঠন প্রয়োজন। যারা কাজটি করতে শতভাগ আন্তরিক, যোগ্য এবং দক্ষ তারাই উপদেষ্টা পরিষদে নিয়োগ পাবেন- এটিই জনপ্রত্যাশা। নিয়োগের পর কেউ যদি কাক্সিক্ষত দায়িত্ব পালনে দুর্বলতার পরিচয় দেন, তা আমলে নিয়ে পুনর্মূল্যায়ন করা দরকার। এখন প্রয়োজন জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে দেশকে নতুন করে ঢেলে সাজানো বা বিনির্মাণ করা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা