পর্যটকের ভিড়ে বিপন্ন পরিবেশ
- ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আমাদের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন নিয়ে অপপ্রচার আর বিতর্কের শেষ নেই। দ্বীপটির পরিবেশগত দিক নিয়ে কোনো আলোচনা না থাকলেও রাজনৈতিক বিতর্ক আর অপপ্রচার তুঙ্গে। নয়নাভিরাম এই দ্বীপ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের সূচনা করেন পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা।
গত বছর জুনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সেন্টমার্টিন কাউকে লিজ দিলে ক্ষমতায় থাকার কোনো অসুবিধা নেই। যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে বলায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর তার ওই দাবিকে সম্পূর্ণ নাকচ করে দেয়। তখন থেকে সেন্টমার্টিন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চলছে। অপপ্রচারকারীরা এখন বলার চেষ্টা করছেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে সেন্টমার্টিন দিয়ে দেবে। এই অপপ্রচার জোরালো হয়েছে তখন, যখন সরকার দ্বীপটির পরিবেশ রক্ষা করে দ্বীপটিকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করতে চাচ্ছে। সেন্টমার্টিন অন্য দেশের কাছে লিজ দেয়া হচ্ছে, সম্প্রতি এমন একটি অপপ্রচারের জবাব দিতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- সেন্টমার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেয়ার পরিকল্পনা নেই। অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন কমপক্ষে ২০ ধরনের বিপদের মুখে। সম্প্রতি ‘এনভায়রনমেন্টাল অ্যাডভান্স’ নামের একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। এ দিকে নয়া দিগন্তের এক খবরে বলা হয়েছে, চার কারণে হুমকিতে পড়েছে সেন্টমার্টিন। যার মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত পর্যটকের চাপ, অপরিকল্পিত হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, বর্জ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার।
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে সেন্টমার্টিন পর্যটকের কাছে এত আকর্ষণীয়। কিন্তু যে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য পর্যটকের কাছে সেন্টমার্টিনের এই আকর্ষণ; সেই পর্র্যটকের কারণে যদি সেন্টমার্টিনের ক্ষতি হয়, ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়ায়; তাহলে সেখানে পর্যটক নিয়ন্ত্রণ করা দোষের কিছু নয়! পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আন্তর্জাতিক জার্নালের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে ২০৪৫ সালের মধ্যে সব কোরাল ক্ষয় হয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ডুবে যাবে। একই সাথে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, তখন পর্যটনটা তাহলে থাকবে কোথায়?
তবে চরম এক বাস্তবতা হলো- এই দ্বীপের ৯৯ শতাংশ মানুষ পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। গত ২০ বছরে এখানে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট। যেগুলোতে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, শত কোটি টাকার বিনিয়োগ আর অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সাথে জড়িত সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমণের বিষয়টি নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বন্ধ করা যৌক্তিক হবে না। বরং পরিবেশের সাথে যেসব বিষয় সাংঘর্ষিক সেগুলো প্রতিহত করা উচিত।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আমলে নিয়েই আমরা বলতে চাই, পর্যটকের ভিড়ে যেন আমাদের নয়নাভিরাম সেন্টমার্টিনে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন না হয়, বিষয়টি সব পক্ষ মাথায় রাখবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপ রক্ষা করতে টেকসই পরিবেশবান্ধব পর্যটনশিল্প গড়ে তোলার উপয়া বের করতে মনোযোগী হতে হবে আমাদের।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা