১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে

ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে

-

দেশকে ফের অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রের মূলে রয়েছেন ছাত্র-জনতার গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পরপর সারা দেশে একধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় সে পরিস্থিতি কঠোরভাবে মোকাবেলা করে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনে। এরপর সংখ্যালঘু ইস্যু, আনসার বিদ্রোহ এবং জুডিশিয়াল ক্যুসহ নানাভাবে অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করে দলটি। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার সেসব অপপ্রয়াস দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করেছে। বর্তমানে যখন একটি স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে ঠিক তখনই ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন শেখ হাসিনা।
ভারতে পলাতক শেখ হাসিনার একটি অডিও কল রেকর্ড সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। যদিও কল রেকর্ডটি শেখ হাসিনার কি না তা নিশ্চিত নয়। কিন্তু সেই কল রেকর্ড এবং শহীদ নূর হোসেন দিবস ঘিরে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা এ ইঙ্গিতই দেয় যে, কল রেকর্ডটি শেখ হাসিনারই।
ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে শেখ হাসিনা নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করার নির্দেশ দেন তার কর্মীদের। শেখ হাসিনা বলেন, যদি কেউ মিছিলে বাধা দেয় বা হামলা করে, তবে সেটি ট্রাম্পের ছবির ওপর হামলা হিসেবে গণ্য হবে। সেই হামলার ছবি তোলার জন্য আলাদা লোক থাকবে। ছবিগুলো আমি ট্রাম্পের কাছে পাঠাব। ছবিগুলো ট্রাম্পকে দেখিয়ে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা যাবে। ট্রাম্পের সাথে আমার যোগাযোগ আছে।
নির্বিচার গণহত্যা চালিয়েও ক্ষমতায় থাকতে পারেননি হাসিনা। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে পালিয়ে গেছেন একমাত্র মিত্র দেশে। এখনো শহীদ পরিবারগুলোর শোক কাটেনি। রক্তের দাগ মুছে যায়নি। আহতদের চিকিৎসা চলছে। আর চোখ, হাত ও পা হারানো মানুষগুলোর বোবা কান্নায় তাদের পরিবারে যে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছিল তারও অবসান হয়নি।
এমতাস্থায় দেশবাসীর ধারণা ছিল, গণহত্যাকারী খুনি আওয়ামী লীগের নেতারা হয়তো অনুতপ্ত হবেন, অনুশোচনায় ভুগবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনুশোচনা তো নেই-ই; বরং তাদের আচরণে চরম ঔদ্ধত্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা একের পর এক নানা কৌশলে স্থিতিশীলতা ধ্বংসের চেষ্টা করছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। দলটির বাংলাদেশে প্রতিবাদ জানানোর কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে কেউ সভা, সমাবেশ ও মিছিলের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা সহ্য করবে না।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত দেশে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি না। এই সুযোগ দেয়া হলে শহীদদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। সেই সাথে দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের সব শিকড় উপড়ে ফেলতে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ড. ইউনূস সরকারকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement