০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১, ৪ রজব ১৪৪৬
`
রাজনৈতিক মামলা নিষ্পত্তিতে ধীরগতি

মজলুমদের ওপর আর জুলুম নয়

-

শেখ হাসিনার শাসনকালে বিরোধী রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ে যারাই তার স্বৈরশাসনের সামান্য বিরোধিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা, গুম, ক্রসফায়ার, গ্রেফতার ও জেল-জুলুমের কোনো সীমা-পরিসীমা ছিল না। গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সব বিরোধী দলকে সন্ত্রাসী, যুদ্ধাপরাধী ও আলেমসমাজকে সাম্প্রদায়িক জঙ্গি ইত্যাদি বিভিন্ন রকম তকমা দিয়ে মামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও নিষ্পেষণ চালানো ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, বিএনপি নেতাকর্মীরা চায়ের আড্ডায় বসলেও তাদেরকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মামলা ও গ্রেফতারের মুখোমুখি হতে হতো। আর জামায়াতে ইসলামীর সাথে তো গত ১৬ বছরে নিষিদ্ধ সংগঠনের মতোই আচরণ করেছিল শেখ হাসিনার সরকার। জামায়াতের নেতাকর্মীদের দেখামাত্রই গ্রেফতার যেন অনিবার্য ছিল। নানা মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগে গায়েবি মামলা দিয়ে গণগ্রেফতার ও নির্যাতন হয়ে উঠেছিল সাধারণ ঘটনা। এভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ ব্যক্তি পর্যায়ের অনেককেই মিথ্যা মামলা দিয়ে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর জেলে ভরে রেখেছিল শেখ হাসিনা। বহু সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীকে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আজকের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসও শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার মামলা থেকে রেহাই পাননি।
কিন্তু হাসিনাবিরোধীরা স্বৈরশাসনের অবসানে ছিলেন ক্লান্তিহীন সৈনিকের ভূমিকায়। জান-মালের মায়া উপেক্ষা করে ফ্যাসিবাদী শাসন উৎখাতে তারা ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
অবশেষে ৫ আগস্ট অসংখ্য ছাত্র-জনতার জীবন দান আর সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে দেশ স্বৈরশাসন মুক্ত হয়েছে। পালিয়ে গেছেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। কিন্তু গত ১৬ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনা তার বিরোধীদের ওপর যেসব নিপীড়নমূলক রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা দিয়েছিল, সেগুলো এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে যারা শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন তাদেরকে এখনো মামলার হাজিরা দিতে কোর্ট-কাচারিতে যেতে হচ্ছে।
যদিও এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকার দুই স্তরের কমিটি গঠন করেছে এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে বলেছে। কিন্তু বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও নেতারা সরকারের কমিটি গঠন ও মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াকে দীর্ঘসূত্রতা মনে করছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেছেন, যারা শেখ হাসিনার পতনের জন্য ১৫ বছর লড়ে সবকিছু ত্যাগ করে আজকের এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, তাদের মামলা এখনো বাতিল হয়নি কেন? এটি সবারই প্রশ্ন।
মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি শুধু বিএনপি, জামায়াতের ক্ষেত্রেই নয়, সব ইসলামী দল ও গোষ্ঠীসহ সব বিরোধী দল ও ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
আমরা চাই, স্বৈরাচারের আমলে বিরোধীদের নামে করা রাজনৈতিক মামলাগুলো যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহার করা হোক। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে মিথ্যা মামলার জন্য কোর্টে হাজিরা দেয়া মানে বাড়তি জুলুম। মজলুমের ওপর আর জুলুম চলতে দেয়া উচিত নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
রাতের ভোটের ৩০ জেলা প্রশাসক গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচনের তারিখ নির্ভর করছে সংস্কার কতটা তার ওপর জটিলতা না থাকলে মঙ্গলবার বিদেশ যাচ্ছেন খালেদা জিয়া ধ্বংসস্তুপ থেকে অর্থনীতি টেনে তোলার চ্যালেঞ্জে অন্তর্বর্তী সরকার সম্মিলিত কল্যাণমুখী সরকার দেশের কল্যাণ আনবে : ডা: শফিক ছাত্রদলকে পড়ায় মনোযোগী হতে বললেন মির্জা ফখরুল বিএফআইইউ প্রধান হতে এস আলম ও আ’লীগের সুবিধাভোগীদের দৌড়ঝাঁপ পদ ছাড়াই রূপালী ব্যাংকে ঢালাও পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন নিম্ন আদালতের ৫০ বিচারক দুপুরে সূর্য উঁকি দিলেও রাত কেটেছে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সকল