বিচার করতে হবে
- ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সব অপকর্মে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে জাতীয় পার্টি। মুখে দু-একবার মৃদু সমালোচনা করলেও প্রতিটি নির্বাচনী প্রহসনে সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। স্বৈরাচারের হাত মজবুত করেছে। গণবিরোধী দলটি জনগণের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন কিংবা নির্বিচার লুটপাট, অর্থপাচার, সংবিধান লঙ্ঘন বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে টুঁ শব্দটি করেনি। সমর্থনের বিনিময়ে এমপি, মন্ত্রীর পদ এবং সংসদে বিরোধী দল হিসেবে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে। দলটির অবস্থান দেশবাসীর অজানা ছিল না। জনগণ এদের আওয়ামী লীগের বি-টিম এবং দালাল বলত। শুধু তাই নয়, তারা যে দালাল এবং সরকারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন, দলের নেতারা তা স্বীকারও করেছেন প্রকাশ্যে।
জি এম কাদের বলেছিলেন, মানুষ আমাদের দালাল বলে। আরো স্পষ্ট করে দালালির বিনিময়ে সুবিধা নেয়ার কথা স্বীকার করেন দলের আরেক নেতা মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেছিলেন, ‘মানুষ দালাল বলে তাতে কী? আওয়ামী লীগকে সমর্থন করছি কিছু পাওয়ার জন্য। ভাগবাটোয়ারা করে খাই।’ এটি কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, ভাড়াটে দুর্বৃত্ত দলের মতো কথা। এরা যে দেশ ও গণবিরোধী সেটি প্রমাণিত। কিন্তু তারা সবচেয়ে বড় অপরাধ করেছে গত বৃহস্পতিবার।
তাদের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে যাওয়া ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছে দলটি। এটি পরিকল্পিত বলেই মনে হয়। এর আগে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু’জন নেতাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দলটি। তার আগে জি এম কাদের ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলার আইনিভাবে মোকাবেলার পরিবর্তে তারা মাঠে কর্মসূচি দেয়। এ থেকে স্পষ্ট, তারা তাদের আওয়ামী দালালির চরিত্র ছাড়তে পারেনি।
কার্যালয়ে হামলার পর দলীয় প্রধান জি এম কাদের যে বক্তব্য দিয়ে শনিবারের সমাবেশের ডাক দেন তাতেও বোঝা যায়, সরকারকে অস্থিতিশীল করতে সংখ্যালঘুদের তৎপরতা, একের পর এক দাবি নিয়ে মহলবিশেষকে মাঠে নামানো, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সৃষ্টির যেসব অপচেষ্টা চলছে, জাতীয় পার্টির মাঠে নামার উদ্যোগ তার বাইরে নয়।
ঢাকায় সমাবেশ ডেকে সরাসরি ছাত্র-জনতার সাথে জাতীয় পার্টির সাংঘর্ষিক অবস্থান নেয়া কৌতূহলের সৃষ্টি করে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে জাপার সমাবেশ প্রতিহত করার পাল্টা কর্মসূচি দেয়া হলে উত্তেজনা দেখা দেয়।
পরে শুক্রবার রাতেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জাতীয় পার্টির কার্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় শনিবার সবধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। নিষেধাজ্ঞার পর উভয় পক্ষ তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছে। ফলে সাময়িক শান্তি বিরাজ করলেও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ সতর্ক অবস্থানে।
আমরা এসব পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির পক্ষে নই। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা নেই। স্বৈরাচারের এই আত্মস্বীকৃত দোসরদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করাই সঙ্গত। পতিত সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও অন্য দোসরদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়ার কী কারণ থাকতে পারে?
জাতীয় পার্টির মাঠে নামা মানেই পতিত ফ্যাসিস্ট দলটিকে ফিরে আসার পথ রচনার সুযোগ দেয়া। এটি কারো জন্যই মঙ্গলকর হবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা