মালিক-শ্রমিক মৈত্রী জরুরি
- ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরী পোশাক শিল্পে জড়িয়ে রয়েছে অর্ধকোটি মানুষের জীবন-জীবিকা। কিন্তু খাতটি অস্থিতিশীল করতে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা উঠে পড়ে লেগেছে। শ্রমিক আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টিতে সক্রিয় তারা। লক্ষণীয়, আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী কিছু দিন বিরতিতে শ্রমিক বিক্ষোভ হচ্ছে। আসলে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে শেখ হাসিনার সুবিধাভোগী শিল্পমালিকরা গার্মেন্ট সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন, এমন মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে অযৌক্তিক শ্রমিক অস্থিরতায় দেড় শতাধিক পোশাক কারখানা এবং অন্তত চার লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানার মালিকরা কিভাবে কর্মীদের বেতন পরিশোধ করবেন; তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। চলমান অস্থিরতায় এক দিকে যেমন আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, পাশাপাশি দেশী-বিদেশী ক্রেতা হারাচ্ছেন গার্মেন্ট মালিকরা।
তৈরী পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির-বিজিএমইএ-এর তথ্যানুসারে, চলমান অস্থিরতায় আনুমানিক ৩০০-৪০০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে নির্দিষ্ট কিছু শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতায় শুধু সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের ২৫০-৩০০ মিলিয়ন ডলারের রফতানি ও উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, গার্মেন্ট খাতে বর্তমান শ্রমিক বিক্ষোভ কতটা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে? নাকি সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কোনো গোষ্ঠী কলকাঠি নাড়ছে? শ্রমিকরা কি দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন? কারণ, এক দিকে গার্মেন্ট খাতে স্থিতিশীলতা আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। অন্যদিকে ঠুনকো অজুহাতে কিছু শ্রমিক রাস্তায় সৃষ্টি করছেন অরাজকতা। গত বৃহস্পতিবার মিরপুরে ফের শ্রমিক বিক্ষোভের পেছনেও পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাত রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা দরকার।
উদ্বেগের বিষয় হলো- আমাদের তৈরী পোশাক শিল্পে এই যে অস্থিরতা বিরাজমান তাতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশে দেশে কাক্সিক্ষত পরিমাণ পোশাক রফতানি করা যাচ্ছে না। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো থেকে তৈরী পোশাক রফতানি বেড়েছে। যদিও চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে বিশ্ববাজারে আমদানিকারক দেশগুলোতে তৈরী পোশাক আমদানির পরিমাণ বেড়েছে।
পোশাক শিল্পে চলমান অস্থিরতার জন্য মূলত তিনটি কারণ দায়ী বলে সম্প্রতি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এগুলো হলো বহিরাগতদের আক্রমণ, শ্রমিকদের যৌক্তিক-অযৌক্তিক দাবির সমন্বয়ে অস্থিরতা ধরে রাখা এবং ঝুট ব্যবসার আধিপত্য। অন্যদিকে শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঠেলে দিতে একটি চক্র শিল্প কারখানায় অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তাই শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে সরকারকে বিশেষভাবে নজর দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
আমরা মনে করি, এই সময়ে তৈরী পোশাক শিল্পে চলমান যে শ্রমিক বিক্ষোভ হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মতলবি। এতে শ্রমিক স্বার্থ কতটুকু রয়েছে, তা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ রয়েছে। এখন যেসব শ্রমিক দাবি-দাওয়া নিয়ে সোচ্চার তারা আসলে শেখ হাসিনার দোসর, গার্মেন্ট মালিকদের সাথে অশুভ আঁতাত গড়ে দেশের স্বার্থবিরোধী কাজে লিপ্ত রয়েছেন। এদের মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি দেশপ্রেমিক মালিক-শ্রমিকদের দৃঢ় মৈত্রী রচনা করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা