২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ইরানে ইসরাইলের হামলা

পুরোদমে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা

-

ইসরাইল গত শুক্রবার শেষ রাতে ইরানে হামলা চালিয়েছে। প্রথমে রাজধানী তেহরান ও পাশের কারাজ নগরীতে। দ্বিতীয় দফায় শিরাজ নগরীতে বিমান হামলা চালানো হয়। এ সময় বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে ইরানের পরমাণু বা জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো হয়নি। রাজধানী তেহরানের পশ্চিম ও দক্ষিণে অবস্থিত কয়েকটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইসরাইল বলেছে, তারা ইরানের কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় ‘প্রতিশোধমূলক হামলা’ চালিয়েছে। এর আগে ইরানের হামলার প্রতিশোধ নিতে তেল-আবিব এ হামলা চালায়। গাজা ও লেবাননে হামাস ও হিজবুল্লাহ নেতাদের হত্যার প্রতিবাদে ইরান গত ১ অক্টোবর ইসরাইলে প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরাইলের হামলা ব্যর্থ করে দেয়ার দাবি করে বলেছে, ইসরাইল বিমান হামলা নয়, বরং ইরানের বাইরে থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। একই সাথে ইসরাইলি আগ্রাসনের জবাব দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছে ইরান। তেহরান বলছে, নিজের ওপর যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের জবাব দেয়ার অধিকার তার আছে। নিঃসন্দেহে ইসরাইল হামলার যথোপযুক্ত জবাব পাবে। অন্য দিকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইরান যদি আবারো প্রতিশোধমূলক নতুন হামলা চালায় তা হলে ইসরাইল ‘প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য’ হবে।
ইসরাইলি হামলার পরও ইরানের রাজধানী তেহরানসহ সারা দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তেহরানের অধিবাসীরা রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকালে যার যার কর্মস্থলে উপস্থিত হন। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম চলছে। তবে বিমানবন্দরে সাময়িক সময়ের জন্য বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখে।
এমন একসময় ইরানের ওপর ইসরাইল হামলা চালালো যখন মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিরতা ও উত্তেজনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে তীব্র। এই উত্তেজনার কারণও ইসরাইল নিজে। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশটি গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে নারী শিশু বৃদ্ধসহ কমবেশি ৪৫ হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। একই সাথে প্রতিবেশী লেবাননে আগ্রাসন চালিয়েছে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে। একের পর এক হত্যা করছে হামাস ও হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইরানের ওপর হামলাকে উদ্বেগজনক বলছেন পর্যবেক্ষকরা। আশঙ্কা করছেন, দু’টি দেশ যেকোনো সময় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। ইসরাইল উপর্যুপরি হামলা চালাতে পারে বলেও আশঙ্কা ব্যক্ত করেন কোনো পর্যবেক্ষক। তেমনটি হলে পুরোদমে আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা সবসময় ইসরাইলের অনুকূলে। ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের নামে দেশটিকে নারকীয় গণহত্যাসহ সবরকম অপকর্মের সুযোগ মূলত যুক্তরাষ্ট্র দিচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন।
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে ‘সরাসরি সংঘর্ষ’ শুরু হলে তার বিরূপতা এড়াতে পারবে না এ অঞ্চলের কোনো দেশ। সে বিবেচনায় বিশ্বশক্তি এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সতর্ক পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement