০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`
সংস্কারে দরকার ঐকমত্য

সুযোগ যেন হাত ছাড়া না হয়

-

আমরা জাতীয় ইতিহাসের অতি গুরুত্বপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয়েছি। সুযোগ এসেছে অতীতের ভুল শুধরানোর। যে ত্রুটি এত দিন আমাদের বড় ধরনের ভোগান্তি আর বিপর্যয়ের কারণ। ছাত্রদের নেতৃত্বে সংঘটিত এ বিপ্লব দারুণ এক সুযোগ এনে দিয়েছে। এটি অনেকটা নরম কাদামাটির সাথে তুলনীয়। যা দিয়ে যেকোনো আকার দেয়া যায়। ফ্যাসিবাদ পতনের পর বাংলাদেশ রাষ্ট্র এখন নরম কাদামাটির অবস্থায় রয়েছে। এখন দেশকে সেই কাক্সিক্ষত আকারে আমাদের রূপান্তরিত করতে হবে। এখানে সব গোষ্ঠীর জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা স্বীকৃতি থাকবে। সুযোগ হাতছাড়া হলে আবার কোনো ফ্যাসিবাদী জাতির ঘাড়ে চেপে বসতে পারে। এই আশঙ্কার বিষয় সবাইকে বিবেচনায় নিতে হবে।
বিভক্ত করে হাসিনার শাসনের নীতি এক ভয়াবহ নৈরাজ্য তৈরি করেছিল। বিগত দেড় দশকে দেশবাসী এক ঘোর অমানিশা দেখেছে। এ অবস্থা যে আবার জাতির ওপর চেপে বসবে না তার নিশ্চয়তা কী। আমরা যদি মনে করি একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এরা রুটিন কাজ করবে, নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তাহলে বড় ধরনের ভুল হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, এটি সাধারণ কোনো পরিবর্তন নয়। এখানে দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা নিরসন ও আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের স্পষ্ট মেন্ডেট রয়েছে। এটি ছাত্র-জনতার শুধু এক মাসের আন্দোলন নয়। এ আন্দোলনে প্রাণ হারানো, পঙ্গু, খোঁড়া ও চোখ হারানো মানুষ শুধু একটি শ্রেণী-পেশার নন। তারা এসেছেন সমাজের সব স্তর থেকে। সুতরাং তাদের সবার চাওয়ার গোড়াপত্তন করতে হবে। এখন এ সরকারের প্রধান কাজ মানুষের বিরুদ্ধে কৃত অপরাধের বিচার ও ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠা। দেড় দশকে আওয়ামী লীগ এবং তার পৃষ্ঠপোষক ও আশীর্বাদপুষ্টরা পাহাড়সম অপরাধ করেছে। বিচারব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা প্রশাসন পুরোটা ধ্বংস করে দিয়েছে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা। এখনো বিচার প্রশাসন ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো ও আইন-কানুন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হাসিনার সাজানো ব্যবস্থা বহাল থাকায় কোনো বিভাগ ঠিকভাবে কাজ করছে না। প্রশাসনের প্রতিটি স্তরের গভীরে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন করা হয়েছে। একে মূলোৎপাটনের আগে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা অসম্ভব। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে পরিবর্তনের মানসিকতা দরকার। যাতে ইতিবাচক পরিবর্তন ধারণ করতে পারে। আবার ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার হুমকি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবতে হবে।
গণতান্ত্রিক সিস্টেমগুলো পুষ্ট করা ছাড়া কোনো রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে সফল হতে পারবে না। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কারের ব্যাপারে ঐকমত্যে আসতে হবে। এমনকি দলগুলো নিজেদের অভ্যন্তরে সংস্কারে আগ্রহী হতে হবে। যাতে দেশবাসী নিশ্চিত হতে পারেন যে, আগের মতো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, পেশিশক্তি ও অনিয়মের চর্চা দলগুলোতে থাকবে না। যাতে দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে মানুষকে শোষণ করতে না পারে।
রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনে প্রধানত দরকার সব পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া। দুর্ভাগ্য হলো- অল্পদিনের ভেতর বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে মতের পার্থক্য দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। এমন হলে কোনোভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের সফল হওয়া খুব কঠিন। মনে রাখা আবশ্যক, এই সরকার ব্যর্থ হলে দেশ আরেক দফা বিপর্যয়ে পড়বে। তাই সবার প্রত্যাশা, ধৈর্য ও প্রজ্ঞা দিয়ে পরিস্থিতি উত্তরণে রাজনৈতিক দলগুলো এগিয়ে আসবে।


আরো সংবাদ



premium cement
দিল্লি জামে মসজিদ নিয়ে হিন্দুসেনার দাবি কক্সবাজার সৈকতে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের তৈরি রোবট দানব যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান গ্রেফতার সাভারে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী তদন্ত প্রতিবেদনসহ আমু-কামরুলকে ১৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেশের ৬৯ কারাগারের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ : কারা মহাপরিদর্শক আমরা হিন্দু-মুসলমান একসাথে লড়াই করে দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দেবো : রিজভী আজমির শরিফ : খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহের ইতিহাস জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও আমেরিকার বাকবিতণ্ডা ‘শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে’ পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১২ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

সকল