২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সরকারের আয়-ব্যয়ে ভারসাম্যহীনতা

সঠিক পরিকল্পনার অভাব

-

৫৩ বছর আগে স্বাধীন হলেও দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনায় আমাদের দেশে কাক্সিক্ষত মাত্রার উন্নতি সম্ভব হয়নি। এ জন্য শাসকশ্রেণীর দায় সর্বাগ্রে এবং সবচেয়ে বেশি। যে কারণে এত বছর পরও এ দেশের মানুষ প্রতারিত এবং ভাগ্যবিড়ম্বিত। তবে বিগত দেড় দশকে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে দেশবাসীর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এর বিস্ফোরণ ঘটেছে সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে। পরিণতিতে হাসিনার তখতে তাউস উল্টে যায়।
বাস্তবে শেখ হাসিনার আমলে গত সাড়ে ১৫ বছরে মাফিয়াতন্ত্রের আদলে দেশ পরিচালিত হওয়ায় আর্থিকসহ সব খাতে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষায় স্বয়ং শেখ হাসিনা বেপরোয়া থাকায় অর্থনীতির বারোটা বেজেছে। এর ফল ভোগ করছেন সাধারণ মানুষ। তাদের জীবনে নেমে এসেছে অসহনীয় দুর্ভোগ। এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি উত্তরণে প্রাণপণ চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
পতিত স্বৈরাচারের আমলে সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে প্রকল্পের নামে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকসহ সরকার ঘরানার ব্যবসায়ীরা বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান। সেই অর্থের বেশির ভাগ বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি ফোকলা করা হয়েছে। দেশে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট বিরাজ করছে।
দেশের অর্থনীতিতে এত অব্যবস্থাপনা যে, সময় মতো ও সুষ্ঠু বাজেট বাস্তবায়ন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় এমনটি মনে করে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রের বরাতে নয়া দিগন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব আহরণ ও সরকারি অর্থ ব্যয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা নেই। সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার একটি প্রধান কারণ হচ্ছে রাজস্ব আহরণ ও সরকারি অর্থ ব্যয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা না থাকা।
পরিপত্রে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বাজেট বাস্তবায়ন সাধারণত অর্থবছরের প্রথম দিকে ধীরগতিতে চলে। একইভাবে অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি লক্ষ করা যায়। পরিপত্রে আরো বলা হয়, বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মেরামত সংরক্ষণ, নির্মাণ ও পূর্তকাজ এবং মালামাল সংগ্রহে অর্থবছরের শেষ দিকে পদক্ষেপ নেয়া হয়। এতে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ের গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। উপরন্তু বছরের শেষে এসে সরকারকে অপরিকল্পিত ঋণের দায়ভার গ্রহণ করতে হয়। ফলে আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যায় না।
বাজেট সুষ্ঠুভাবে ও সময়মতো বাস্তবায়নে আগাম পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে অপরিকল্পিত সরকারি ঋণ এড়ানো এবং সরকারের ঋণজনিত ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাজেট ও অর্থ বিভাগের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাধারণভাবে কোনো অর্থবছরে পুরো বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। এমনকি সংশোধিত বাজেটও পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। গত পাঁচ বছরে মূল বাজেটের গড়ে ৮১ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের গড়ে ৮৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
অর্থবছরের শুরুতে আয়-ব্যয়ে ধীরগতি করার প্রবণতা মূলত অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির একটি অপকৌশল। তাই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক থেকে সব ধরনের মেরামত ও সংরক্ষণ কাজ শুরু করতে হবে। এতে বিভিন্ন প্রান্তিকে বিল পরিশোধে ভারসাম্য বজায় থাকবে। সরকারি অর্থ খরচের গুণগত মানও নিশ্চিত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ায় পেট্রোল স্টেশনে প্রবাসীদের নতুন কাজের অনুমতি শিগগিরই দলে ফিরছেন সাকিব! পুলিশের ৫৪ কর্মকর্তাকে বদলি ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রচেষ্টা আটকে দিল মার্কিন সিনেট আন্দোলনের মূল স্পিরিট হলো বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ : কেন্দ্রীয় সভাপতি ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করবে অস্ট্রেলিয়া ‘জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না’ মার্কিন শ্রম প্রতিনিধিদল আসছে শুক্রবার ৬ ঘণ্টা অবরোধের পর মহাখালীর সড়ক ও রেললাইন ছাড়লেন রিকশাচালকরা দেশে ফিরেছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান

সকল