অন্যায় প্রভাব রুখতে হবে
- ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০৫
পদ্মার শাখা হিসনা নদী। কুষ্টিয়ার ‘ভেড়ামারা উপজেলার প্রাণ’ হিসেবে পরিচিত এই হিসনা নদী গিলে খাচ্ছে প্রভাবশালীরা। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করেছে অট্টালিকা, বাঁধ দিয়ে মাছচাষ আর শুকনো মৌসুমে চাষাবাদ। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ জেলা প্রশাসন নির্বিকার। একটি সহযোগী দৈনিকের কুষ্টিয়া সংবাদদাতার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
হিসনা ব্রিজের দক্ষিণ পাশে নদীর কিছু অংশের প্রস্থ ৪০ মিটার আছে। বাদবাকি বেশির ভাগ জায়গায় তা কমে ১৫-২০ মিটার মতো আছে। ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দুই পাশে চলছে নদী দখল। কাঠেরপুল অংশের নদীর দু’পাশ দখল হয়ে প্রস্থ কমে সরু হয়ে মরাখালে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এখানে নদীর জায়গা দখল করে নির্মিত হয়েছে ১০টি বড় বড় দালানবাড়ি। এ অংশে নদীর প্রস্থ অর্ধেকের কম।
ভেড়ামারার উত্তর রেলগেট এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অবৈধ দখলদাররা নদীর অস্তিত্ব অস্বীকার করে থাকে। অনেকে নিজের নামে রেকর্ড করে নেয় বলে অভিযোগ আছে। দখলকৃত জমি একাধিকবার হাতবদল হয়েছে। তাই জমি কিনে যারা নতুন মালিক হয়েছেন, তারা এ নদীর অস্তিত্ব আর স্বীকার করেন না। নদীর এই অংশের উপর নির্মিত ফারাকপুর ব্রিজের নিচে ইট দিয়ে স্থায়ী বাঁধ দেয়া হয়েছে। স্রোত ও নাব্য হারিয়ে এ অংশের হিসনা নদী এখন মৃত। হিসনা নদীর উপরে যত ব্রিজ করা হয়েছে তার কোনোটি এর প্রস্থের সমান নয়। প্রতিটি ব্রিজ ওই জায়গার নদীর অবস্থানের এক তৃতীয়াংশের কম।
ভূমি অফিস থেকে পাওয়া সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্যটি হচ্ছে- ১ ও ১৫২ দুই পাশাপাশি দাগের নদীর অস্তিত্ব ম্যাপে থাকলেও নদীর জায়গা ব্যক্তি মালিকদের নামে রেকর্ড হয়ে আছে। এখানে নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের ১৫১ নং দাগটি সরকারের নামে। ব্রিজটি নদীর প্রস্থের ৮ ভাগের ১ ভাগ (যা আইনসিদ্ধ নয়)। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, ১নং ও ১৫২নং দাগের ঠিক পাশের ৭২১নং দাগটি নদীর নামে। প্রফেসর পাড়ার এই অংশেও নদীর জায়গা লুট করে বাড়ি, স্থাপনা আর বাঁধ দিয়ে চলছে মাছচাষের কাজ। অতি সাম্প্রতিককালে নদীর জায়গা দখল করে বালি ও মাটি ফেলার অভিযোগ উঠেছে দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
ভেড়ামারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মি শিরিন বলেন, প্রবহমান হিসনা নদী শুধু নয়, কোনো নদীর গতি রোধ করে মাছ চাষের সুযোগ নেই।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, যারা বাঁধ নিয়ে নদীর স্রোত বাধাগ্রস্ত করছে, নদীর জমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাধারণত নদী দখল, পানি দখল, মাটি দখল, বালুমহাল দখল ইত্যাদি সব দখলের উৎস হলো ক্ষমতা বা রাজনীতির অন্যায় প্রভাব। একই সাথে চলে দুর্নীতি ও আত্মসাতের ঘটনা। সাথে স্বজনপ্রীতি। প্রভাব অন্যায় না হলে সাধারণত এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। এ জন্য সব অন্যায় প্রভাব রুখতে হবে। তা প্রতিহত করতে হবে সবাই একসাথে মিলে। আমরা আশা করি, সরকার অবিলম্বে সক্রিয় হবে। সব ধরনের অন্যায় প্রভাব মোকাবেলা করতে হবে, যার মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব সবচেয়ে শক্তিশালী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা