অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরছে
- ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০৫
দেশের অর্থনীতির অবস্থা নাজুক। তবে তা কতটা, অনেকে জানেন না। পতিত স্বৈরাচার নির্বিচার লুটপাট ও পাচারের মাধ্যমে অর্থনীতির কোমর ভেঙে দিয়ে গেছে। শুধু এটুকু জানলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, সরকারি কর্মচারীদের বেতন দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তিন দফায় বিপুল টাকা ছেপে সরকারকে দিয়েছিল। ডলারের অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আমদানির এলসি পর্যন্ত খুলতে পারছিলেন না ব্যবসায়ীরা। শেষ মুহূর্তে পতিত সরকার অর্থাভাবে বিদেশী ঋণের কিস্তি পরিশোধ দূরের কথা, বিভিন্ন পরিষেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের পাওয়া পরিশোধ করতে পারছিল না।
এমন অবস্থা আপনাআপনি সৃষ্টি হয়নি। দেশকে সম্পূর্ণ অচল ও অকার্যকর করে তুলে দেশটিকে পরনির্ভরশীল করে রাখার সুনির্দিষ্ট ষড়যন্ত্র থেকে সেটি করা হয়েছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে।
স্বৈরাচারের পতনের পর দুঃশাসন ও লুণ্ঠনের অবসান ঘটেছে। দেশে সুস্থ স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিস্ময়কর হলেও সত্য, মাফিয়া হাসিনা-উত্তর মাত্র তিন মাসের কম সময়ে অর্থনীতিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অনেকগুলো ছিনতাই হয়ে যাওয়া ব্যাংক প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, যে সুশাসন ও শৃঙ্খলার কথা বারবার বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার সেটি প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
তবে সুশাসন ফিরলে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে যাবে এমন নয়- তথাকথিত উন্নয়নের নামে পতিত সরকার যে বিপুল বৈদেশিক ঋণ জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে রেখে গেছে, তা পরিশোধে অনেক অর্থ চলে যাবে। শেখ হাসিনা সরকারের নেয়া বৈদেশিক ঋণের স্থিতি গত জুন পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার এসব ঋণ জনগণের কাঁধে চাপিয়ে গেছে। চড়া সুদে নেয়া বৈদেশিক ঋণের একটি অংশ নানা যৌক্তিক ও অদরকারী উন্নয়ন কাজে ব্যয় হলেও বেশির ভাগ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। অথচ ঋণের পুরোটা পরিশোধ করতে হবে বর্তমান ও পরবর্তী সরকারগুলোকে। এখন যেমন কিস্তি দিতে হচ্ছে।
বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে যতটা ঋণ এসেছে, তার তুলনায় প্রায় ২৮ কোটি ডলার দেশী-বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এ তিন মাসে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে ৮৪ কোটি ৬১ লাখ ডলারের ঋণ ছাড় করানো সম্ভব হয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ সুদ ও আসল মিলিয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছে ১১২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। সেটি ক্ষীয়মান রিজার্ভে হাত না দিয়ে করতে পেরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভের পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে বলেও জানা যাচ্ছে। অনিয়ম, লুটপাট, চুরি, বিদেশে পাচার বন্ধ হলে আশাবাদের একটি জায়গা তৈরি হবে।
এ মুহূর্তে সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় যে চাওয়া সেটি হলো- মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনা; অর্থাৎ দ্রব্যমূল্য কমানো। ফ্যাসিস্ট সরকারের নৈরাজ্যকর শাসনে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ছিল দেশবাসীর দুর্ভোগের অন্যতম কারণ। এখনো সেটি প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, তারা ব্যাংকের সুদের হার আরো বাড়াবেন। আগামী দুই আড়াই মাসের মধ্যে তা ১০ শতাংশে বাড়ানো হবে। এতে দ্রব্যমূল্য কমবে বলে আশা করা যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা