জাতীয় ঐক্য যেন অটুট থাকে
- ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০৫
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার পদত্যাগের কথা প্রথমে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সেদিন রাতে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানকে পেছনে রেখে জাতির উদ্দেশে ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণের কথা জানিয়েছিলেন। এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর এখন ফের আলোচনায় এসেছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি।
সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে লেখেন, বঙ্গভবনে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তাকে রাষ্ট্রপতি জানান, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এর দালিলিক কোনো প্রমাণ তার কাছে নেই।
রাষ্ট্রপতির এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য ‘স্ববিরোধী’ ও ‘মিথ্যাচার’। আর সর্বোচ্চ আদালতের সাংবিধানিক ব্যাখ্যা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে শপথ পড়ানোর পর রাষ্ট্রপতির সবশেষ মন্তব্য সম্পর্কে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিয়েছেন মানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নিশ্চিত হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে পদত্যাগপত্রের প্রয়োজন নেই। সংসদ বাতিলের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ আর থাকে না।
রাষ্ট্রপতির এমন ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক মশাল মিছিল করে তার পদত্যাগ দাবি করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়কসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বলেছেন, একজন রাষ্ট্রপতি হয়ে দু’রকম কথা বলতে পারেন না। একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছেন। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই। তবে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত না করার আহ্বান জানানো হয়।
কথা হলো, রাষ্ট্রপতি নিজে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পড়িয়েছেন। এখন তিনি বলছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই। সরকার গঠনের এতদিন পরে রাষ্ট্রপতি কী কারণে এ কথা বললেন তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। তবে এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, ফ্যাসিস্ট শাসনপদ্ধতি এখনো রাষ্ট্রের প্রতিটি জায়গায় বহাল তবিয়তে রয়েছে। বিভিন্ন এজেন্সি ও কুচক্রী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। লক্ষণীয়, নানা জায়গায় দেখা যাচ্ছে, ফ্যাসিস্ট শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তখন হঠাৎ করে রাষ্ট্রপতি আড়াই মাস পর কেন এমন কথা বললেন, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আমরা মনে করি, গত আড়াই মাস ধরে স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে। তাই এ মহূর্তে দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশী-বিদেশী সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনের শিকার হওয়া এসব দল দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ৫ আগস্টের আগে যেভাবে একসাথে মজলুম হিসেবে জনতার কাতারে দাঁড়িয়েছিলেন, খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন; ষড়যন্ত্র রুখতে সেভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। কারণ জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে মজলুম পরিচয়ে মাঠে অবস্থান করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা