ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হোক বিচারালয়ে
- ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০৫
অধিকারহারা বঞ্চিত এবং অবিচারের শিকার মানুষ বাঁচতে বিচার ব্যবস্থার দ্বারস্থ হয়। পতিত হাসিনার শাসনে গুম, খুন ও পীড়নের শিকার হয়ে বিচার বিভাগের কাছে এসে উল্টো আরেক দফা অবিচারের শিকার হয়েছে মানুষ। হাসিনা বরং বিচার বিভাগকে বিরোধী মত দমনের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। অনেক কিছুই তিনি করেছেন বিচার বিভাগের কাঁধে বন্দুক রেখে। এ ক্ষেত্রে বিচারকের আসনে বসে থাকা অনেকে হাসিনার পাণ্ডা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন। এখনো এ ধরনের একদল বিচারকের বাধার মুখে আদালতে ন্যায়বিচারের রাস্তা উন্মুক্ত করা যাচ্ছে না। রোববার সর্বোচ্চ আদালত এক যুগান্তকারী রায়ে স্খলনজনিত কারণে অভিযুক্ত বিচারকদের অপসারণ করার পথ খুলে দিয়েছেন।
হাসিনা তার শাসন আমলে বিচার ব্যবস্থার ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর ফলে কোনো অপরাধ না করেই তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দণ্ড ভোগ করতে হয়েছে। তিনি যাকে চেয়েছেন বিচার বিভাগকে দিয়ে তাকেই হেনস্তা করেছেন। এই সুযোগে কিছু বিচারপতি নিজেদের নানা অবৈধ সুযোগ-সুবিধাও বাগিয়ে নিয়েছেন। অনেকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ গ্রহণ, নিজের শত্রু কিংবা অপছন্দের লোককে নাকানি চুবানি খাওয়ানোর অভিযোগ এসেছে। এ দিকে হাসিনা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা আয়নাঘর, গুপ্ত কারাগার, ব্যাংক লুট, মুদ্রাপাচারসহ হেন কোনো অপকর্ম নেই করেনি, তাদের বিরুদ্ধে চাক্ষুষ প্রমাণ থাকার পরও এই অপরাধীরা বিচারের আওতায় আসেনি। এদের মধ্য থেকে কেউ নিজেকে শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ, কেউ প্রকাশ্যে আদালতে বসে ‘ট্রুথ ইজ নো ডিফেন্স’ বলে মন্তব্য করেছেন। অনেকেই সরকারে থাকা দুর্নীতিবাজদের মতোই অর্থেবিত্তে ফুলেফেঁপে উঠেছেন।
হাসিনা ও তার সাথে থাকা পুরো অপরাধী চক্র পালিয়ে গেলেও অভিযুক্ত বিচারকরা নিজেদের আইনি সুরক্ষার সুযোগ নিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। বিপ্লবী সরকারের শুরুতে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে একবার অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করেন। তখন প্রধান বিচারপতিসহ ছয়জন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর অভিযুক্তদের মধ্যে বাকি কেউ পদত্যাগ করেননি। ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী’ সংক্রান্ত রায়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান ফিরে এসেছে। বিচার বিভাগ কুক্ষিগত করার পরও হাসিনা ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। এই রায়ের মাধ্যমে এটি এখন ফিরে গেল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারক প্যানেলের কাছে। এর মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে কাজ করা বিচারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে আশা করা যায়। রায়ের পর মতামত দিতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল হওয়া মানে বিচার বিভাগ দুর্বৃত্তায়ন ও রাজনীতির খপ্পর থেকে বেরিয়ে এলো। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের জায়গায় গেল।’
হাসিনা চরম দুঃশাসন কায়েম করেছিল একশ্রেণীর বিচারকদের সহায়তায়। শাসকদল ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কাছ থেকে পীড়নের শিকার হয়ে মানুষ যখন এই বিচারকদের কাছে ফরিয়াদ জানিয়েছে তারা এর প্রতিকার না করে পুনরায় তাদের ওপর আরেক দফা পীড়ন করেছে। এখন সুযোগ হয়েছে যারা এমন গর্হিত কাজ করেছেন তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের। এমনকি যারা নতুন সরকারের আমলেও সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে আছে তাদের নিবৃত্ত করার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা