২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩০, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
খালে দেয়াল তুলে মাছ চাষ

সর্বজনীন সম্পদ ব্যক্তিগত নয়

-

কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ- দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী নাড়িদিয়ায় সাগরিয়া খালের সেতুর নিচে ইটের দেয়াল তুলে মাছ চাষ করছে রূপালী মৎস্য চাষ কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ। এতে খালে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে নৌ-চলাচল। পানিপ্রবাহ বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫০০ পরিবার। একটি সহযোগী দৈনিকের কুমিল্লা প্রতিনিধির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
উল্লিখিত প্রতিবেদনে এলাকাবাসীর বরাতে জানানো হয়, প্রকল্পের নামে মাছ চাষ করছেন গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক কয়েকজন চেয়ারম্যানসহ ১৫০ প্রভাবশালী। ৫ আগস্টের পর থেকে তারা সবাই আত্মগোপনে।
ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, সম্প্রতি বন্যায় মোল্লা, নাড়িদিয়া, আঙ্গারিয়া ও দোখাইয়া গ্রামের সড়ক এবং ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে যায়। এসব এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল-বিলের কালভার্টের মুখ বন্ধ করে প্রায় ১০৫ কানি (১২ হাজার ৬০০ শতাংশ) জমিতে মাছ চাষ করায় রূপালী মৎস্য চাষ কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনে তারা মৌখিক অভিযোগ করেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মাছ চাষের জন্য ওই সেতুর নিচে তিন-চার মাস আগে ইটের দেয়াল তুলে ও লোহার বেড়া দিয়ে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। সম্প্রতি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে মোল্লা, নাড়িদিয়া, আঙ্গারিয়া ও দোখাইয়া গ্রামের শত শত বসতবাড়ি ও বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক।
গত ৯ অক্টোবর ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা লোহার বেড়া অপসারণের সময় প্রকল্পের লোকজন বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ ব্যাপারে রূপালী মৎস্য চাষ কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এলাকার সবার মতামতে ব্রিজের মুখে লোহার খাঁচা তৈরি করা হয়েছে, যাতে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়। এতে দোষের কিছু আছে বলে মনে হয় না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ম অত জানা নেই। কিছু লোক এর বিরোধিতা করছেন। তবে বেশির ভাগ লোক মাছ চাষে সম্মতি দিয়েছেন।
প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এলাকার কিছু লোক একত্র হয়ে প্রকল্পটি শুরু করেন। ৫ আগস্টের পর স্থানীয় নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থাকায় প্রকল্পটি চরম সঙ্কটে পড়ে। পরে এটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে স্থানীয় লোকজন আমাকে এ পদে দায়িত্ব দিয়েছেন।
লাকসাম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘পানি বন্ধ করে মাছ চাষ করা যাবে না। তবে ওখানে নেট দেয়া আছে। তারপরও আমরা সরেজমিন দেখব, পানি বন্ধ রয়েছে কি না। পানি বন্ধ থাকলে খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।’ লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
স্রোতস্বিনীর পানিসহ ভূ-গর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থ কোনো সম্পদ কারো ব্যক্তিগত নয়। এ সম্পদ সবার। এতে সবার অধিকার রয়েছে। এ কারণে খালে দেয়াল তুলে মাছ চাষ করা যায় না। খালকে খালের মতো চলতে দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল