১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩০, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ

সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা

-

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। উত্তীর্ণদের উষ্ণ অভিনন্দন। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন শিক্ষার্থী। পাস করেছেন ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৯ জন। গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এবার জিপিএ ৫ পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। গত বছর জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন। এ বছর পাসের হার কমেছে দশমিক ৮৬ শতাংশ। অবশ্য এবার জিপিএ ৫ বেড়েছে ৫৩ হাজার ৩১৬ জন। পাসের হার ও জিপিএ ৫ এর দিক থেকে এবারো এগিয়ে মেয়েরা। যদিও মেয়েদের চেয়ে ছেলে পরীক্ষার্থী ছিল বেশি।
পাসের হার কম হওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেছেন, যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছিল, সেগুলোর ফলাফল উচ্চমাধ্যমিকে গড় পাসের হারে বড় প্রভাব ফেলে না। উচ্চমাধ্যমিক পাসের হার মূলত নির্ভর করে ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের ওপর। কিন্তু এবার এই দু’টি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছিল। ফলে গড় পাসের হার স্বাভাবিক সময়ের মতো হয়েছে।
এবার ৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের থেকে কেউ পাস করেনি। এই সংখ্যা গতবার ছিল ৪২টি। একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস করবে না, এটি কিভাবে হতে পারে? বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখতে হবে।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে শিক্ষার্থীরা তাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। মাত্র সাতটি পরীক্ষার পর সরকার আন্দোলনের মধ্যে পরীক্ষাগ্রহণ স্থগিত করে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর বাকি পরীক্ষাগুলো নেয়ার বিষয়ে কথা হলেও সচিবালয়ে এক অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির মধ্যে সরকারকে আর পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এরপর যে পরীক্ষাগুলো হয়েছিল সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে ফলাফল ঘোষণার কথা জানায় সরকার। ফলাফল ঘোষণার আগের দিনও কিছু শিক্ষার্থী অটো পাসের জন্য বিক্ষোভ করেছিলেন। সরকার তাদের দাবি মেনে নেয়নি। অটো পাস না দেয়া সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।
পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, উত্তীর্ণদের মধ্যে আন্দোলনে শহীদ হওয়া শিক্ষার্থীও রয়েছেন। শহীদ হওয়া উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা হলেন- সবুজ মিয়া, সাগর গাজী, মো: রায়হান, শাহরিয়ার বিন মতিন, নাফিসা হোসেন মারওয়া, সাদ আল আফনান, শিহাব হোসেন, মাহদী হাসান, শাওয়ান্ত মেহতাব প্রিয়, তানজিল মাহমুদ সুজয় ও ফয়সাল সরকার। উত্তীর্ণ জীবিত শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারে আনন্দ-উল্লাস বিরাজ করলেও শহীদ পরিবারে বিরাজ করছে বেদনাবিধুর পরিবেশ। আমরা শহীদ শিক্ষার্থীদের রুহের মাগফিরাত কামনা ও তাদের পরিবারদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আশা করি ফ্যাসিবাদমুক্তি লড়াইয়ে তাদের আত্মদান জাতি কখনও ভুলে যাবে না।
এবার শিক্ষার্থীরা একাটি অস্বাভাবিক সময়ের মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন। এমন সময় শিক্ষার্থীদের জীবনে আর না আসুক। একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক দেশে মুক্তভাবে তারা বেড়ে উঠুক। সবার উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত হোক, এটাই সবার প্রত্যাশা।


আরো সংবাদ



premium cement