২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩০, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
কালেমাখচিত কালো পতাকা মিছিল

উগ্রবাদ দূর করতে হবে

-

সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের কিছু স্থানে কালেমাখচিত কালো পতাকা নিয়ে মিছিল হয়েছে। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জের একটি মিছিলে মধ্যপ্রাচ্যের সশস্ত্র সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএসের ব্যবহার করা পতাকাও দেখা গেছে। এসব মিছিল আয়োজনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ভূমিকা আছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে সামনে রেখে মূলত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই এসব করছে বলে জানা যায়। নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের বরাতে এমন তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
লক্ষণীয় হলো, এমন সব বিষয় নিয়ে মিছিল করা হচ্ছে, যেগুলো দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ পছন্দ করে। বিশ্বের অনেক দেশে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন। এর মধ্যে রয়েছে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, তুরস্ক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি। দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনা করে ২০০৯ সালে বাংলাদেশেও হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি ভারতেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সংগঠনটির ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, হিযবুত তাহরীর উগ্রবাদী কার্যকলাপে যুক্ত এবং নিরীহ তরুণদের আইএসএসের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দিতে উসকানি দেয়। তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য তহবিল জোগাড় করে।
উগ্রবাদ নিয়ে বাংলাশের অভিজ্ঞতা তিক্ত। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে প্রতিবেশী দেশের মদদে উগ্রবাদ নিয়ে বাংলাদেশে যা হয়েছে তা খুব বাজে নজির। তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ এমন অপপ্রচার চালিয়েছিল যে, বাংলাদেশে উগ্রবাদী শক্তির ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে উগ্রবাদ দমনের নামে নির্বিচারে ইসলামপন্থীদের নির্মূল করতে থাকে। দেশের আলেম সমাজকে জঙ্গি হিসেবে দেখানো অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ মানুষকে মৌলবাদী শক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদেরকে ধর্মহীন জীবনে অভ্যস্ত করার অপচেষ্টা চালায়, যা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও লজ্জাকর। কারো কাছে ইসলামী বইপুস্তক পাওয়া গেলেও পুলিশ তাকে জঙ্গি হিসেবে গ্রেফতার করত। জঙ্গি কার্ড ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। এটি ছিল তার ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রাখার কৌশল।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা গ্রহণের পর আওয়ামী লীগসহ প্রতিবেশী দেশটি এখন খুব জোরেশোরে এটি প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান ঘটেছে। জঙ্গি দিয়ে ভরে গেছে দেশ। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে সামনে এনে কালেমাখচিত কালো পতাকা ও আইএসের পতাকা নিয়ে ছাত্রলীগের মিছিল আসলে সেই অপচেষ্টার একটি অংশ।
অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব কর্মকাণ্ড অবশ্যই শক্ত হাতে দমন করতে হবে। দেশে উগ্রবাদীদের সংগঠিত করার পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের সব অপচেষ্টা অবিলম্বে নস্যাৎ করতে হবে। ইসলামে উগ্রবাদ বা চরমপন্থার কোনো স্থান নেই। তাই যারা ইসলামের নামে চরমপন্থা অবলম্বন করে মানুষকে বিপথগামী করে তাদের বিষয়ে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। উগ্রবাদীদের ওপর ভর করে ড. ইউনূস সরকারকে বেকায়দায় ফেলার যেকোনো অপরাজনীতি নির্মূল করতে হবে।
পতিত আওয়ামী লীগের দেশবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে জনগণ সরকারের পাশে থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল