২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা

প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা করুন

-


এবার পূর্বাঞ্চলে ১১টি জেলা এক অস্বাভাবিক বন্যায় বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে ফেনীসহ বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষ এমন বন্যা দেখেনি। এমন অতিবৃষ্টি আগেও হয়েছে এ অঞ্চলে। কিন্তু বন্যায় একতলা ভবন ডুবে গেছে, এর নজির নেই। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো ফেনী গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। এক সপ্তাহ জেলাটির বেশির ভাগ অঞ্চল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে একই ধরনের বন্যা দেখা দেয় নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লায়। কোনো ধরনের সতর্কীকরণ ছাড়া উজানে বাঁধ ছাড়লে এই নজিরবিহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে বন্যাপীড়িত মানুষের প্রতি দেশবাসীর সাড়াও অভূতপূর্ব ছিল, ব্যাপক ত্রাণকাজ হয়েছে। তবে সমন্বয়হীনতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর প্রকৃত ক্ষত দৃৃশ্যমান হয়। বেসরকারি সংস্থা সিপিডি বন্যাপীড়িত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরেছে। সংস্থাটির হিসাবে পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংস্থাটি হিসাব করে দেখিয়েছে, সরকারি ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতা ও অসামঞ্জস্যতার বিষয়টি। নোয়াখালীতে ১৬ লাখ ৪৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ক্ষতির পরিমাণ চার হাজার ১৯২ কোটি টাকা। বরাদ্দ দেয়া হয় ১৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্তরা গড়ে মাত্র ৯৩ টাকা করে পেয়েছেন। অন্য দিকে সিলেটে বন্যাদুর্গতদের সংখ্যা সাড়ে ৯ হাজার, ক্ষতির পরিমাণ ২০ কোটি ৫০ লাখ। সেখানে ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয় ১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। গড়ে প্রতি জন ১৫ হাজার ৩২০ টাকা ত্রাণ পেয়েছেন।
১১টি জেলায় ত্রাণ বিতরণে যে চিত্র সংস্থাটি পেয়েছে তাতে বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে, যার যতটুকু পাওয়া দরকার ছিল তাতে ভারসাম্য বজায় থাকেনি। যেভাবে বন্যা এ অঞ্চলে হানা দিয়েছে তাতে পরিকল্পিত ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর প্রস্তুতি সরকার নিতে পারেনি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছিল এমন একসময় বন্যা হয়েছে; যখন দেশে বড় একটি পরিবর্তন হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের প্রায় সবাই পালিয়ে গিয়েছিলেন। একই সাথে স্থানীয় প্রশাসন একেবারে অকার্যকর অবস্থায় ছিল। এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকারকে একেবারে হ-য-ব-র-ল’র মধ্যে এ ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়েছে।
এখন বন্যা শুরু হয়েছে সুনামগঞ্জ, শেরপুর, নেত্রকোনা ও গাইবান্ধায়। এসব এলাকায়ও ভারত থেকে আসা পানিতে অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে।

স্বোচ্ছাসেবকরা ঢাকা থেকে ছুটে গেছেন বনভাসি মানুষকে উদ্ধার ও ত্রাণকাজে। পূর্বাঞ্চলের ত্রাণ কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা থেকে সরকার শিক্ষা নিতে পারে। যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তারা যেন বেশি সহযোগিতা পান। ত্রাণ বিতরণে দেখা যায়- সহজে পৌঁছা যায় এমন জায়গায় সবাই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। অথচ প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে সবচেয়ে বেশি সাহায্য প্রয়োজন সেখানে ত্রাণদাতারা পৌঁছান না। এবার যেন তেমনটি না ঘটে, সরকারকে এটি খেয়াল রাখতে হবে।
পূর্বাঞ্চলে ফসল ও কাঁচা ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য নগদ অর্থসাহায্য প্রয়োজন। বিশেষ করে বিপুলসংখ্যক ঘরবাড়ি মেরামতে সাহায্য দরকার। কিছু বেসরকারি সংস্থা এবং কিছু ব্যক্তি-উদ্যোগে এ কাজে বিচ্ছিন্ন সাহায্য কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ সহায়তা ফান্ড গঠিত হয়েছে। সরকার যেন সবকিছু মাথায় রেখে পরিকল্পনা করে বন্যা-পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করে।


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল