২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
পাটের দামে খরা

আবাদ কমার শঙ্কা হ্রাস করুন

-

অনাবৃষ্টি-খরায় কমেছে পাটের ফলন। বিঘাপ্রতি উৎপাদন কমেছে তিন থেকে চার মণ। খাল-বিলে পর্যন্ত পানি না থাকায় বেশির ভাগ পাটের রঙ হয়েছে কালো। এতে মণপ্রতি ৫০০-৮০০ টাকা কম দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। একটি সহযোগী দৈনিকের ফরিদপুর ও বাজবাড়ী প্রতিনিধির প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
উৎপাদন খরচের তুলনায় কাক্সিক্ষত দাম না পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। এসব কারণে আগামীতে পাটের আবাদ কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ কম হয়েছে। এ বছর পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৪৫ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে। ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, এ বছর জেলায় ৮৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে আবাদ হয়েছে ৮৬ হাজার ৫২৪ হেক্টর জমিতে। অতিরিক্ত খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে এবার পাটের ফলন কিছুটা কম হয়েছে।
রাজবাড়ীর কৃষকদের ভাষ্য মতে, পাট বপনের সময় থেকে এ বছর অতিরিক্ত খরা হয়। খরার কারণে অনেক জমির পাট মরে যায়। যেসব জমিতে একাধিকবার সেচ দেয়া সম্ভব হয়েছে, সেসব জমিতে পাট হয়েছে। তবে কাক্সিক্ষত ফলন হয়নি। আবার পাট কেটে জাগ দেয়ার জন্য নছিমন, ভ্যান ও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে অন্যত্র নিতে হয়েছে। এতে কৃষকদের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু খরচের তুলনায় বাজারে ততটা পাটের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে পাটচাষিদের।
ফরিদপুরের নগরকান্দা, সালথা, মধুখালী, বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, ভাঙ্গা, সদরপুর এবং চরভদ্রাসন উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বর্তমানে প্রতি মণ পাট দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা চাষিদের প্রত্যাশার তুলনায় কম। তাই পাটের আঁশের লোকসান পুষিয়ে নিতে পাটকাঠিতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন পাটচাষিরা। তারা পাটকাঠি বিক্রি করে দিচ্ছেন।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর অতিরিক্ত খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে পাটের ফলন কম হয়েছে। ভালো মানের আঁশের অভাবে বাজারে দামও কিছুটা কম। তবে পাটখড়ি বিক্রি করে চাষিরা সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিচ্ছেন।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর অতি খরার কারণে পাটের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। বাজারে যে দামে পাট বেচাকেনা হচ্ছে তাতে কৃষকদের লাভ হচ্ছে না। তাই আমরা কৃষকদের পাটের বিকল্প ফসল আবাদের পরামর্শ দিচ্ছি।’
কৃষিপ্রধান এই দেশে পাটচাষিদের আশঙ্কা দূর করা এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। তারা যে, পাটের আবাদ কমার শঙ্কা করছেন এটা দূর করতে হবে। আমরা আশা করি, অবিলম্বে পাটের আবাদ কমার শঙ্কা দূর করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement