নির্বাচন হতে হবে সংস্কারের পর
- ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটা উচিত। তিনি অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘যা-ই হোক না কেন, আমি তার পাশে থাকব। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।’
সেনাপ্রধান তার বাহিনী রাজনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করবে না জানিয়ে প্রসঙ্গক্রমে বলেন, এটি সম্ভব যখন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছুটা ভারসাম্য থাকে। তিনি সশস্ত্রবাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন।
যে মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টা দেশে অনুপস্থিত তখনই সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য প্রকাশ পেল। তার বক্তব্য দেশজুড়ে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কারণ বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো রাজনীতিসংশ্লিষ্ট।
দেশে এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে। তাদের দায়িত্ব একটিই। পতিত স্বৈরাচারের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করা, যাতে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করা যায় এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া যায়।
ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কাজেই হাত দিয়েছে। সরকার এরই মধ্যে ছয়টি সংস্কার কমিটি গঠন করেছে। স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া নষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দূরের কথা, স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়াও অসম্ভব মনে করি। সংস্কার অসম্পূর্ণ রেখে নির্বাচন করারও প্রশ্ন ওঠে না। সুতরাং সবার আগে সংস্কারের বিষয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং এ জন্য একটি সময়সীমা ঠিক করে নেয়া দরকার। সেটি না করা পর্যন্ত নির্বাচনের সময় বেঁধে দেয়ার সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি না।
তবে রয়টার্সের রিপোর্ট থেকে এমন ধারণার সুযোগ আছে যে, সেনাপ্রধান সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের কথাই বলেছেন। সেটিও যদি বলে থাকেন, তবু তা এককভাবে নয়, সব দলমতের অংশীজনের সংলাপেই ঠিক করা উচিত।
সংস্কারের আগ পর্যন্ত ধৈর্য ধারণের দরকার আছে, সে কথা সেনাপ্রধান নিজেই বলেছেন। রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও তার বক্তব্য ইতিবাচকভাবেই দেখা হচ্ছে। তারা সংস্কার করেই নির্বাচন চায়। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে দ্রুত সংস্কারকাজ সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছে।
প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের কথা শুরু থেকেই বলে আসছে। তবে দলটি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা কখনো নাকচ করেনি; বরং সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির আগেই অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন, জরুরি সংস্কারকাজ সম্পন্ন করেই নির্বাচন হতে হবে।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই নির্ধারিত হবে। সংস্কার কাজে সময় লাগতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সংলাপের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য সময়সীমা ঠিক করার পরই নির্বাচনের বিষয়ে ভাবা যেতে পারে। তার আগে নয়।
সেনাপ্রধানের বক্তব্যে একটি আভাস আছে, যা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, যা-ই হোক না কেন, তিনি ড. ইউনূসের পাশে থাকবেন। এর অর্থ অস্পষ্ট নয়। অনাকাক্সিক্ষত কিছুই যেন ঘটতে না পারে সে বিষয়ে শুধু সেনাপ্রধান নয়, দায়িত্ববান প্রতিটি দল, প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের সতর্ক থাকা জরুরি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা