২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নদী থেকে বালু লুট

প্রশাসনই দায়ী

-

একটি সহযোগী দৈনিকের নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, সোমেশ্বরী, কংস, গুমাই, ধলাইসহ নেত্রকোনার নদ-নদীর বুকচিরে লুট করা হচ্ছে বালু। এতে বেড়েছে ভাঙন। প্রতিনিয়ত জায়গা-জমি হারাচ্ছে নদীর তীরবর্তী মানুষ। সদর, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর থেকে সবচেয়ে বেশি বালু তোলা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে তীরে জমা রাখা বালু জব্দ করা হলেও স্থায়ীভাবে উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই।
জানা গেছে, প্রতি রাতে লুট হচ্ছে অর্ধকোটি টাকার বালু। মামলা জটিলতার কারণে ইজারা হচ্ছে না বালু মহালগুলোর। সুবিধা নিচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা। সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের লোকজন বিতাড়িত হয়েছে। তাদের জায়গা দখল করেছে বিএনপির লোকজন। কিছু অসাধু নেতাকর্মী বালু উত্তোলনের সাথে যুক্ত রয়েছেন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সদর, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে সাতটি বালুঘাট রয়েছে। এ থেকে প্রতি বছর ৭০-৮০ কোটি টাকা রাজস্ব আসত। অন্তর্বর্তী সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে উল্লেখ করা হয় পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়ায় বালু উত্তোলন হচ্ছে না। পরে হাইকোর্টের বিচারক রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইজারা প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদরের বাঘরোয়া, পাঁচপাই ও তাতিয়ার গ্রামের কংস নদ থেকে তিন চারটি নৌকায় বালু উত্তোলন করা হয়। কমলাকান্দার সিধলী এলাকায় ১৫-২০টি নৌকায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর প্রত্যেক এলাকায় রাত হলেই বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব এলাকায় প্রতি রাতে ৪০-৫০টি নৌকায় (বাল্কহেড) বালু বোঝাই করা হয়। প্রতিটি নৌকা থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আদায় করা হয়। সরকারের পতনের আগে দু-একবার প্রশাসন অভিযানে গেলে বালুখেকোরা দলবল নিয়ে হামলা করে। দুর্গাপুরের অ্যাসি ল্যান্ডের ওপর হামলা করা হলে কোনো রকম আত্মরক্ষা করে ফিরে আসেন। সদর উপজেলা বামরোয়া গ্রামের আরিফ তালুকদার ও তুহিন তালুকদার বলেন, প্রতি রাতেই বিএনপির কিছু লোক নদী থেকে অবৈধভাবে তিন-চারটি নৌকা ভরে বালু বিক্রি করেন। এতে এলাকার নদীভাঙন চরমপর্যায়ে রয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।
কলমাকন্দা উপজলোর সিদ্ধি গ্রামের কায়েস আহমেদ বলেন, প্রতি রাতেই একটি অসাধু চক্র বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, বালুমহাল এলাকার নদীতে দুই দিন আগেও এসি ল্যান্ডকে অভিযানে পাঠিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রশাসন বা সরকার এ ব্যাপারে দায়িত্ব পালন করেনি, করলে এ অবস্থা হতো না। প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকলে এ অবস্থা হয় না। সারা দেশে বালু লুটের মহোৎসব চলছে। আমরা আশা করি অবিলম্বে তা বন্ধ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement