২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
পাঠ্যপুস্তক সংস্কার নিয়ে সংশয়

কমিটিতে ধর্মীয় স্কলার নিন

-

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে মূলত তৎকালীন প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতনের পর এখন দেশের শিক্ষাঙ্গনে স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন করে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। সাড়ে তিন মাস পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে ক্যাম্পাসে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়Ñ দেশের সব শিক্ষাঙ্গন দ্রুত কর্মচঞ্চল হয়ে উঠুক, এটি দেশবাসীর প্রত্যাশা।
স্বৈরাচারী সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের প্রায় শেষপ্রান্তে নিয়ে গেছে। শিক্ষা নিয়ে পতিত মাফিয়া সরকারের তিন মন্ত্রীÑ নুরুল ইসলাম নাহিদ, দীপু মনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল যেসব অপকর্ম করেছেন তাতে মনে হয়, গোটা জাতিকে শিক্ষাহীন করে রাখার এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে লিপ্ত ছিলেন তারা।
কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তকে একের পর এক পরিবর্তন, প্রাথমিক থেকে সব পাবলিক পরীক্ষা, ভর্তি পরীক্ষা ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে। এর বেশির ভাগ হয়েছে ওপর মহল থেকে সুযোগ দেয়ায়। আগে থেকে শিক্ষা প্রশাসনের সব দফতরে ঘুষ-দুর্নীতি ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অনিয়ম-দুর্নীতি রীতিমতো মহামারীতে রূপ নেয়। বিশেষ করে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন নিয়ে চলে লঙ্কাকাণ্ড। এতে এমন সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা আমাদের ধর্মীয় ও স্বাধীনতার চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নেমে এসেছে নিপীড়ন-নির্যাতন।
স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি শিক্ষা প্রশাসনে কিছু সংস্কারে হাত দিয়েছেন। স্বৈরাচারের সহযোগী অনেক কর্মকর্তাকে সরিয়ে নতুনদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। সবার আশা ছিল এখন যা কিছু করা হবে তাতে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মতামতের প্রতিফলন ঘটবে। কিন্তু সেটি শুরুতে হোঁচট খেয়েছে বলে মনে হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
যেমনÑ পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনে গঠিত কমিটি নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের সমন্বয়ে গঠন করা কমিটিতে কোনো ইসলামী বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ এবং মাদরাসা শিক্ষা থেকে প্রতিনিধি রাখা হয়নি। ফলে শঙ্কিত হওয়া স্বাভাবিক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেটি গণমানুষের চিন্তা-চেতনার আলোকে সংস্কারের কাজটি কতটা যথাযথভাবে করতে পারবে। বিশেষ করে ধর্মীয় বিষয়াদি এবং মানবিক মূল্যবোধে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোতে মাদরাসা শিক্ষিত শিক্ষাবিদ এবং ইসলামিক স্কলারদের সম্পৃক্ত করা জরুরি বলে আমরা মনে করি।
এ বিষয়ে ইসলামপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে কমিটিতে ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষাবিদদের অন্তর্ভুক্তির দাবি উঠেছে। তাদের এ দাবি ন্যায়সঙ্গত। এ দেশে শিক্ষাকাঠামোতে প্রায় অর্ধেক মাদরাসার সাথে সংশ্লিষ্ট। আর দেশের প্রায় ৯২ শতাংশ মানুষ ইসলামে বিশ্বাসী। তাদের বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে।
আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, স্বৈরাচারের বিষনিঃশ্বাসমুক্ত পরিবেশে শিক্ষার্থীরা আবার জ্ঞানান্বেষণের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে, এই পরিবেশ বর্তমান সরকার নিশ্চিত করবে। এ জন্য শিক্ষা প্রশাসনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।


আরো সংবাদ



premium cement
‘সমন্বয়ক’ দাবি করা আহত সোহেলকে ভুয়া বলল ছাত্রদল সিলেটে অস্ত্র ও মাদকসহ নারী গ্রেফতার শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে : শাহজাহান কপ-২৯ : ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ২০০ মিলিয়ন বরাদ্দ দিতে ইইউ’র সমর্থন চাইল বাংলাদেশ আইসিসির পরোয়ানা : গ্রেফতার হবেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী? ছাত্র জমিয়তের ময়মনসিংহ জেলা কমিটি গঠন সবার আগে নির্বাচনী সংস্কার দরকার : এ্যানি হাসিনার নেয়া প্রতিটি রক্তের ফোটার বিচার হবে : ইসহাক খন্দকার ডেঙ্গুতে আরো ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪৫৮ রেলওয়ে কারখানাকে আধুনিকায়ন করে জনবল নিয়োগ দেয়া হবে : রেল উপদেষ্টা বর্ণিল আয়োজনে বশেমুরকৃবির ২৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত

সকল