২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
পিটিয়ে মানুষ হত্যা

সমস্যার গোড়ায় হাত দিতে হবে

-

দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি দু’টি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শামীম মোল্লøা নামে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। নিহত শামীম মোল্লার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ আছে। এই দু’টি হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেনের হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আটজনের ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন ছাত্রলীগের পদধারী নেতা এবং বাকি তিনজন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। অন্য দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লøা হত্যার ঘটনায় ধামরাই কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবকে আটক করেছে পুলিশ।
তোফাজ্জল হত্যার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঢাবি প্রশাসনের উদ্যোগে তাৎক্ষণিক মামলা দায়ের, ছয়জনকে গ্রেফতার, তদন্ত কমিটি গঠন, তদন্ত রিপোর্ট প্রদান এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্টকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এগুলো স্বস্তিদায়ক।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে। এর আগেও বুয়েটে একাধিক ছাত্রকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। তাদের বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি।
ঢাবি ও জাবির সাম্প্রতিক হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতা প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। এতে অভিভাবকরাও শঙ্কিত।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পলায়নের পর একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে দেশে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চক্রান্ত চলছে। ঢাবি ও জাবির ঘটনায় ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা সেই চক্রান্তের অংশ কি না সেটিই প্রশ্ন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত। তাদের অনেকে এখনো বহাল তবিয়তে। অনেককে দেশত্যাগ করতে দেয়া হয়েছে।
যেখানে গণহত্যা চালিয়ে পার পাওয়া যায়, সেখানে দু’জনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় কিছুই হবে না- এমন মনোভাব কি সেই শক্তিকে হত্যাকাণ্ড চালাতে উৎসাহিত করছে, যারা অভ্যুত্থানের পরও দেশকে অস্থিতিশীল করে রাখতে চায়?
দেশে অপরাধীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছিল; কিন্তু সে অভিযানের ফলাফল এখনো স্পষ্ট নয়। উপরন্তু অভিযানকে কেন্দ্র করে কিছু অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্ম হয়েছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে যদি অপরাধীরা ব্যাপক হারে গ্রেফতার হতো ও আইনের মুখোমুখি হতো তাহলে আইন হাতে তুলে নেয়ার মতো অপরাধ করতে অনেকের মনেই ভয় কাজ করত।
আমরা মনে করি, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা ৫ আগস্টের পরাজিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শক্তির দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তের অংশ।
দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা ও মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারকে কোনো অঘটন ঘটার পরই শুধু নয়, অঘটন যাতে না ঘটতে পারে সে জন্য আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সতর্ক থাকতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সাথে কাজ করব : ড. ইউনূস ‘দিনে দাওয়াতি কাজ করতে হবে আর রাতে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে’ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রাণি ও পরিবেশের জন্য বড় হুমকি নতুন পর্যটন গন্তব্যের সন্ধান করছে সরকার : হাসান আরিফ বানারীপাড়ায় হত্যা ও প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার ২ রাবির আরবি বিভাগের নতুন সভাপতি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম ‘ট্রাম্পের সাথে অভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজে পাবেন অধ্যাপক ইউনূস’ তাজিকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে : মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ফেরতের দাবি জানালেন আলাল টানা দুই ওভারে ২ উইকেট শিকার তাসকিনের

সকল