বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি ভিসা তাদের ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ভিসার নেট রেভিনিউ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ভোক্তা ব্যয়ের স্থিতিশীল প্রবণতা, লেনদেনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রস-বর্ডার ট্রানজেকশনের ইতিবাচক চিত্র এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
ভিসার তথ্য মতে, এই তিন মাসে তাদের মোট পেমেন্ট ভলিউম ধ্রুব-মুদ্রার ভিত্তিতে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মার্চে শেষ হওয়া আগের প্রান্তিকের তুলনায় অপরিবর্তিত। এ সময় ভিসা মোট ৬৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ট্রানজেকশন প্রসেস করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। আন্তর্জাতিক লেনদেনে আরো ইতিবাচক চিত্র দেখা গেছে; ইউরোপের অভ্যন্তরীণ লেনদেন বাদ দিলে ক্রস-বর্ডার ভলিউম বেড়েছে ১১ শতাংশ এবং সামগ্রিকভাবে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বৈশ্বিক ভ্রমণ ও বাণিজ্যের সার্বিক বৃদ্ধিকে ইঙ্গিত করে।
ভিসার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রায়ান ম্যাকইনার্নি বলেন, ‘এই প্রান্তিকে আমাদের নেট রেভিনিউ ১৪ শতাংশ, জিএএপি ইপিএস ১২ শতাংশ এবং নন-জিএএপি ইপিএস ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রান্তিকজুড়ে আমরা এ ধারায় ইতিবাচক চিত্র লক্ষ্য করেছি। যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তারা প্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল উভয় ধরনের খরচেই সক্রিয় রয়েছে। আমরা এআই ও স্টেবলকয়েন-এর মতো নতুন প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রগুলোয় নতুনত্ব আনতে মনোযোগ বাড়াচ্ছি, যা আমাদের দীর্ঘমেয়াদে আরো শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবে বলে আমি আশাবাদী।’
রেভিনিউ রিসোর্স বিশ্লেষণ বলছে, সেবা খাত থেকে আয় ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার, যা বছরে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ডেটা প্রসেসিং রেভিনিউ ১৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে। আন্তর্জাতিক লেনদেনের আয় দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার (১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি) এবং অন্যান্য আয় ৩২ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ০ বিলিয়নে পৌঁছেছে। এছাড়া, মোট আয় থেকে ক্লায়েন্ট ইন্সেনটিভ বাদ দেয়ার পর তা এ প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ০ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি।
জিএএপি অনুযায়ী, পরিচালন ব্যয় বছরে ৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ০ বিলিয়ন ডলারে, যার মূলে রয়েছে লিটিগেশন প্রভিশন ও কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি। এসব বাদ দিয়ে নন-জিএএপি ব্যয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ। জিএএপি-ভিত্তিক নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বা প্রতি শেয়ারে ২ দশমিক ৬৯ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় যথাক্রমে ৮ শতাংশ ও ১২ শতাংশ বেশি। বিশেষ খরচ বাদ দিয়ে ভিসার নিট মুনাফা ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বা প্রতি শেয়ারে ২ দশমিক ৯৮ ডলার হয়েছে, যা যথাক্রমে ১৯ শতাংশ ও ২৩ শতাংশ বেশি।
প্রান্তিক শেষে তাদের হাতে নগদ অর্থ ও বিনিয়োগযোগ্য সিকিউরিটিজ রয়েছে ২০ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ।
ভিসা কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক, প্রযুক্তি-নির্ভর উদ্ভাবন এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে নেতৃত্ব অব্যাহত রাখতে তারা কাজ করে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য টেকসই মুনাফা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞপ্তি



